স্টাফ রিপোর্টার:
রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হয়েছে। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
তবে কেন্দ্রীয় নেতারা দুপুর ২টার পর থেকে বক্তব্য রাখবেন। বর্তমানে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলা থেকে আসা বিএনপি নেতারা বক্তব্য রাখছেন। ইতোমধ্যেই রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে।
দুপুর পৌনে দুইটার দিকে মঞ্চে ওঠেন এই গণসমাবেশের প্রধান অতিথি ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে সকাল ৯ টায় জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) শিল্পীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে দলীয় ও দেশাত্ববোধক গান পরিবেশন শুরু করেন। তারা সমাবেশের মূল মঞ্চের পাশের আরেকটি মঞ্চে এই সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক ও গীতিকার ইথুন বাবুসহ আরও অনেকে সেই মঞ্চে ছিলেন।
এদিকে গণসমাবেশ উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে আসতে থাকেন। ভোর ৬টায় গণসমাবেশের জন্য রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের তিনটি গেটের তালা খুলে দেয় পুলিশ। এরপর থেকেই দলীয় নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে গণসমাবেশস্থলে ঢুকতে থাকেন।
বিএনপি কর্মীরা জানান- গণসমাবেশস্থলের সামনের দিকে বসার জন্য তারা আগেভাগেই মাদ্রাসা মাঠে চলে এসেছেন। আর বিএনপির নেতারা বলেন, দুপুর ২টা থেকে গণসমাবেশ শুরু কথা থাকলেও নেতাকর্মীরা চলে আসায় তারা সকাল ৯টা থেকেই শুরু করেছেন। প্রথমে স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখছেন শেষদিকে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন- রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. এরশাদ আলী ঈসা। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন, বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে গণসমাবেশে সকালেই নেতাকর্মীরা চলে আসায় মহানগরী জুড়ে ব্যাপক সর্তক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজশাহী শহরের মোট ১৭টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়েছে তারা। এছাড়া গণসমাবেশস্থলে প্রবেশের মূল তিনটি গেটে পুলিশ ও আর্মড পুলিশ অবস্থান নিয়েছেন। সিসিটিভির মাধ্যমে পুরো শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নজরদারি করা হচ্ছে।
রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের এই সমাবশের মাধ্যমে শেষ হচ্ছে ঢাকার বাইরে বিনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এর আগে চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেটে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি।
আর রাজশাহীতে বিএনপির সর্বশেষ বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। যদিও পথে পথে বাধার কারণে সেই মহাসমাবেশে রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ জেলা থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিতে পারেননি।
তবে, এবারের চিত্র ভিন্ন। অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের কারণে গত বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাত থেকেই গণসমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা। গণসমাবেশস্থলে ঢুকতে না পারলেও পাশের ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচেই সামিয়ানা টাঙিয়ে রাত্রিযাপন করেন তারা। আর মাঠের মধ্যেই চলে রান্নাবান্না ও খাওয়া দাওয়া। আজ (৩ ডিসেম্বর) স্লোগানে স্লোগানে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন তারা।