Date: April 27, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / শ্রীপুরে কলাবাগান থেকে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

শ্রীপুরে কলাবাগান থেকে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

February 29, 2024 12:53:19 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
শ্রীপুরে কলাবাগান থেকে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গৃহবধূকে নির্যাতনের পর জলন্ত আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। রাতে নির্যাতনের পর বাড়ির পাশে কলাবাগানের ভেতর নির্জন স্থানে পুড়িয়ে মারা হয় গৃহবধূকে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। স্বজরা সারারাত খোজাখুজি করেও গৃহবধূর সন্ধান পায়নি। সকালে বাড়ির অদূরে কলাবাগানের ভেতর পুরো শরীর আগুনে পোড়ানো মৃতদেহ দখতে পায়। ঘটনার পর থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে অভিযুক্ত স্বামী। তবে প্রতিবেশীরা বলছে স্বামীর নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে শরীর আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ বলছে, মৃতদেহে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করে খুনীরা। 

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ার) গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের গুতার বাজার এলাকার আনসার ক্যাম্পের পাশে কলাবাগানে ভেতর ওই ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ মালেকা বানু (৩৫) উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের কাঠমিস্ত্রী বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী।

নিহত গৃহবধূর ছোটভাই মো.সুজন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বিগত ২০ বছর পূর্বে বাচ্চু মিয়ার সাথে বোনের বিয়ে হয়। তার স্বামী দীর্ঘ দিন ধরে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য শারীরিক মানষিক নির্যাতন করতো। পনেরো দিন আগেও তাদের মধ্যে মারধরে ঘটনা ঘটেছে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আমাদের জানানো হয় মালেকাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এরপর রাতে আমরা অনেক খোজাখোঁজি করে তার সন্ধান করতে পারি নাই। আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে জানতে পারি বাড়ির অদূরে আগুনে পোড়ানো মৃরদেহ পরে আছে কলাবাগানে। এরপর আমরা কয়েকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি  আগুন পোড়ানে বিকৃত মরদেহ পরে আছে কলাবাগানে। বোনের স্বামীর বাড়ির অনন্য লোকজন জানায় মালেকা গায়ে আগুন দিয়ে আত্নহত্যা করেছে। রাতে মালেকার সাথে স্বামী বাচ্চু তাকে অনেক মারধর করছে। কিন্তু আমার বোন মালেকা আমাদেরকে জানিয়ে তার স্বামী বাচ্চু টাকার জন্য তাকে নির্যাতন করছে। নির্যাতনের পর তার স্বামী বাচ্চু আমার বোনকে পুড়িয়ে মারে। পরে আত্নহত্যার নাটক সাজায়। আমার বোন সাত বছরের ছোট ছেলে আরিফ রেখে শরীরে আগুন দিয়ে আত্নহত্যা করতে পারে না। তিনি আরও জানান, তার স্বামী তাকে নির্যাতন করে খুন করবে, জ্বালিয়ে মারবে এমন হুমকি সব সময় দিয়ে আসছে।

নিহত গৃহবধূর ছেলে মানিক মিয়া জানায়, বাবা মায়ের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি হয়,নিয়মিত। গত বুধবার রাতে আমি আমার কারখানায় কর্মরত ছিলাম। রাতে ফুফাতো বোন আরজিনা জানায় বাবা মায়ের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হচ্ছে। পরে জানানো হয় মাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। আমি রাতের কর্মস্থল থেকে সকাল সাতটার দিকে বাড়িতে যাই। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ করে মায়ের সন্ধান পাইনি। ক্লান্ত শরিরে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। কিছু সময় পর শুনতে পাই মায়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে মায়ের পোড়ানো বিকৃত মৃতদেহ কলাবাগানে পড়ে আছে। আমি মনে করতাম সব সময় মা ঝগড়াঝাঁটি হলে অন্য বাড়িতে চলে যেত। কিন্তু আজ এই দৃশ্য দেখতে হবে বুঝতে পারিনি।

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীর পোড়ানো বিকৃত মরদেহ দেখতে পাই। আগুনে পোড়ানোর বিষয়টি বলা যাচ্ছেনা। পুলিশেকে খবর দেয়া হয়েছে।

গাজীপুর জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল আজমীর হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত চলছে। ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গৃহবধূর গায়ে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে আত্নহত্যার নাটক সাজিয়ে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা ছিল।