মো. তুহিন, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীর সাথে পরকীয়া প্রেমিককে আপত্তিকর অবস্থায় পেয়ে ধারালো বটি দিয়ে তাদের এলোপাতাড়ি কোপান আজিজুল। পরে তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যান তিনি। পুলিশ ও স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় আজিজুলের স্ত্রী তাসলিমা খাতুনকে (২৮) উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ঘরে পড়ে ছিল পরকীয়া প্রেমিক আশরাফুলের মরদেহ। সোমবার (৪ নভেম্বর) উপজেলার চন্নাপাড়া গ্রামে আজিজুল হকের বাড়িতে এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটে।
নিহত আশরাফুল ইসলাম (৩০) দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার পলিবটতলী গ্রামের আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে। তিনি এসএস ফ্যাশন নামে একটি কারখানার পরিচালক ছিলেন। আহত তাসলিমা খাতুন ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া গ্রামের আজিজুল হকের স্ত্রী এবং আশরাফুলের কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। অভিযুক্ত আজিজুল হক পেশায় নির্মাণ শ্রমিক এবং শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন।
স্থানীয়রা জানান, আশরাফুলের কারখানায় চাকরি করেন তাসলিমা। প্রতিদিন সকালে কাজে চলে যেতেন আজিজুল, ফিরতেন বিকেলে বা রাতে। তাসলিমা ও আশরাফুলের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আজিজুল কাজে চলে গেলেও বিশেষ প্রয়োজনে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় ফিরে আসেন। এসে বসত ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকির পর তাসলিমা দরজা খুললে ভেতরে অস্বাভাবিক অবস্থায় তাদের দেখতে পান। উত্তেজিত হয়ে আজিজুল ধারালো বটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে আজিজুল পালিয়ে যান।
স্থানীয়রা তাসলিমাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে পুলিশে খবর দেন তারা। দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর ধারণা, পরকীয়ার জেরেই আজিজুল এই ঘটনা ঘটান।
নিহতের শ্যালক আশরাফুল আলম জানান, তার দুলাভাই সাত বছর ধরে ওই কারখানা পরিচালনা করছিলেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক কন্যাসন্তান রয়েছে। সকাল থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল এবং কারখানাতেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয়রা ফোন করে হত্যাকাণ্ডের খবর দেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে তার রক্তাক্ত মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে একাধিক স্থানে কোপানোর ক্ষত ছিল এবং অণ্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ আংশিক কাটা ছিল। ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে একটি ধারালো বটি উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত আজিজুল পলাতক রয়েছেন। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।