স্পোর্টস ডেস্ক:
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের বাংলাদেশ স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়ে গেছে। সেখানে সাকিব আল হাসানের নাম আছে। বিদায়ী টেস্ট খেলতে বৃহস্পতিবার তার দেশে ফেরারও কথা। সবকিছুই অনুমিত পথে এগোচ্ছিল। কিন্তু হুট করেই নানা গুঞ্জন ও অনিশ্চয়তার কথা ছড়িয়ে পড়ে কিছু সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে। সেসব নিয়ে সাকিব নিজে বা সংশ্লিষ্ট কেউই মুখ খুলছেন না।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় পা রাখার কথা সাকিবের। কিন্তু বুধবার রাতে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, দুবাইয়ে যাত্রাবিরতিতে থাকা এই ক্রিকেটারকে দেশ থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত যেন তিনি দেশের পথে উড়াল না দেন। নিরাপত্তাজনিত কারণেই এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে বলে সেসব খবরে বলা হয়। মুহূর্তের মধ্যে এই খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে।
তবে এই ব্যাপারে সাকিবকে জিজ্ঞেস করা হলেও কোনো উত্তর তিনি দেননি। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও এখন দুবাইয়েই আছেন আইসিসির সভায় অংশ নেওয়ার জন্য। তার কাছে এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলেও বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কোনো জবাব তার কাছ থেকে মেলেনি।
দেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর সক্রিয় বিসিবি পরিচালকের সংখ্যা এমনিতেই একদম কম। তাদের কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করা হলেও তারা কিছু বলতে রাজি নন। এমনকি ‘নো কমেন্ট’ ধরনের কিছুও তারা ‘অন রেকর্ড’ বলছেন না।
সব মিলিয়ে আদতেই সাকিবকে দুবাইয়ে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে কি না, তার দেশে ফেরা নিয়ে সত্যিই কোনো অনিশ্চয়তা বা জটিলতা তৈরি হয়েছে কি না, সেটিও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। কেবল নানা সূত্র থেকে কিছু তথ্য মিলছে আর গুঞ্জন ডালপালা ছড়াচ্ছে। ভরসা করার মতো সুনিশ্চিত খবর মিলছে না।
কদিন আগে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছিলেন, সাকিবের দেশে আসা ও পরবর্তীতে দেশ ছেড়ে যাওয়া নিয়ে কোনো বাধা তিনি দেখছেন না।
সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই অবশ্য নানা তৎপরতা চলছে ক্রিকেট অনুসারীদের মধ্যে। স্কোয়াড ঘোষণার বেশ আগে থেকেই তার দেশে ফেরা ঠেকাতে মিছিল, স্লোগানসহ নানা প্রতিবাদী কর্মসূচি দেখা গেছে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের আশেপাশে। তাদের প্রতিবাদের ভাষা ফুটে উঠেছে স্টেডিয়ামের দেয়ালে নানা লেখা আর গ্রাফিতির মাধ্যমেও। এমনকি সাকিব-বিরোধী ও সাকিবের ভক্তদের মুখোমুখি অবস্থান ও কিছুটা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে শোনা গেছে।
সেসব কর্মসূচি চলছে এখনও। সাকিবের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে বুধবার। তার দেশে ফেরা ঠেকাতে ফেইসবুকে ইভেন্ট খোলা হয়েছে এবং একটি পক্ষ বৃহস্পতিবার বিসিবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছে।
দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার, সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত হওয়া সাংসদ, সেই সরকার পতনের পর যিনি হত্যা মামলার আসামী, তিনি শেষ পর্যন্ত দেশের মাঠে বিদায়ী টেস্ট খেলবেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে কেবল হয়তো তিনি দেশে পা রাখার পরই।