প্রযুক্তি ডেস্ক:
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার রোকনুজ্জামানের বয়স ২২ বছর। ২০১৫ সালে মাদ্রাসা থেকে হাফেজ হয়েছেন। পড়েছেন কওমি মাদ্রাসাতেও। এখন ভেড়ামারার আড়কান্দি গ্রামে বসে মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করেন। ফ্রিল্যান্সিং করে রোকনুজ্জামানের মাসিক এখন প্রায় এক হাজার মার্কিন ডলার, অর্থাৎ এক লাখ টাকার বেশি আয় করেন।
ভেড়ামারার আড়কান্দি গ্রামে বাড়ি রোকনুজ্জামানের। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে মাধবপুর দারুস সুন্নাহ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। এখান থেকে ২০১৫ সালে হাফেজ হন তিনি। ২০১৬ সালে ঢাকার মুগদা দারুল উলুম মাদ্রাসায় ভর্তি হন।
পড়াশোনার সময় ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন, ফলে কওমি মাদ্রাসার লেখাপড়া শেষ হয়নি। বছর দুই পরে ফিরে যান নিজ গ্রামে সেখানেই বসে কাজ করছেন রোকনুজ্জামান। কাছের মানুষদের কাছে তিনি সুইট নামেও পরিচিত। রোকনুজ্জামানের বাবা নাসির উদ্দিন গ্রামের একজন ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী চিকিৎসক, মা শাহিনা আক্তার গৃহিণী। তাঁর ছোট বোন আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষা দেবে।
শুরুর গল্প
যেহেতু রোকনুজ্জামান মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন, তাই প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় তেমন ছিল না। কিন্তু প্রযুক্তির প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তাঁর। ২০১৮ সালে একটা স্মার্টফোন কেনেন তিনি। কৌতূহলবশত রোকনুজ্জামান নিজেই সেই ফোন থেকে ডিজাইনের বিভিন্ন অ্যাপ, ওয়েবসাইট ঘাঁটাঘাঁটি করতে থাকেন। গতকাল সোমবার তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে প্রথম একটা বিজনেস কার্ড তৈরির ভিডিও দেখি। আগ্রহ বেড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে এক আপার সহযোগিতায় স্থানীয় যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ভর্তি হই।’
তখনো রোকনুজ্জামান ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। কৌতূহল থেকেই শেখা। এরপর সেই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের এক সতীর্থের কাছে শুনলেন অনলাইনে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আয় করা যায়। এরপর এ ব্যাপারে আরও জানা শুরু করলেন। প্রথমে পরিবারের কোনো সমর্থন পাননি রোকনুজ্জামান। যেহেতু মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে একটা সম্পূর্ণ আলাদা একটা জগতে কাজ করা, তাই কেউই এটার পক্ষে ছিলেন না। নিজেরও কোনো কম্পিউটার ছিল না। রোকনুজ্জামান বলেন, ‘সেই সময় স্থানীয় একটা পত্রিকার অফিসে থেকে কাজ শিখতাম ও চর্চা করতাম। মনে হতো একটা নির্দেশনার প্রয়োজন। এই অফিস থেকেই শুনি ক্রিয়েটিভ আইটি নামের ঢাকার একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কথা।’