সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় এক যুবদল নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ অভিযোগ পাওয়া গেছে এক বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের কিত্তা গ্রামে উপজেলা যুবদল নেতা হাসান আশরাফের বাড়িসহ তার সমর্থকদের অন্তত ৫টি বাড়িতে এই হামলা চালায় উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. নাসির মাতুব্বরের সমর্থকরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাসির মাতুব্বরের সাথে উপজেলা যুবদল নেতা হাসান আশরাফের বিরোধ চলছিল। এরই জেরে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় স্থানীয় নকুলহাটি বাজারে বিএনপি নেতা নাসির মাতুব্বর ও যুবদল নেতা হাসান আশরাফের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ১২ জন আহত হন। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
রবিবার সকালে বিএনপি নেতা নাসির মাতুব্বরের কয়েকশত সমর্থক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে যুবদল নেতা হাসান আশরাফের দোতলা বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং তার একটি টিনের খড়েরঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় হাসান আশরাফের সমর্থক স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারন সম্পাদক মাজেদ মোল্যার দুটি ঘর, ইউনুস মোল্যা দুটি ঘর, বিভাগদী গ্রামের শহীদ সরদারের বাড়ি ঘর ও শফিকের একটি দোকান ভাঙচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
যুবদল নেতা হাসান আশরাফ বলেন, শনিবার নকুলহাটি বাজারে মারামারির সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। আমি বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ আপার সাথে ছিলাম। তারপরেও আজ সকালে উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাসির মাতুব্বর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল ওহাবের সমর্থকরা আমার ও আমার সমর্থকদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাসির মাতুব্বর বলেন, এই হামলার সাথে আমার লোকজন জড়িত না। হামলার সময় আমি আমার লোকদের ঠেকিয়ে রেখেছিলাম। হামলার ঘটনাটি কয়েক গ্রামে ঘটেছে। এর ভেতর দিয়ে কে বা কারা হামলা করেছে, তা আমি জানি না।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, শনিবার সংঘর্ষের পর থেকে নাসির মাতুব্বর ও হাসান আশরাফের সমর্থকদের আমরা শান্ত থাকার জন্য বলেছিলাম। এলাকায় পুলিশও মোতায়েন ছিল। কিন্তু নাসির মাতুব্বরের গ্রুপের লোকজন এসে হাসান আশরাফসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। তিনি আরো বলেন, হামলাকারীরা অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটিয়েছে। আমাদের পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।