Date: November 22, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / জাতীয় / হজের বিমান ভাড়া বেড়েছে ৫৮ হাজার

হজের বিমান ভাড়া বেড়েছে ৫৮ হাজার

February 17, 2023 09:49:31 PM   স্টাফ রিপোর্টার
হজের বিমান ভাড়া বেড়েছে ৫৮ হাজার

পুনর্নির্ধারণের দাবি আটাবের
স্টাফ রিপোর্টার:
গেলো বছরে হজযাত্রীদের জন্য বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এ বছর বিমান ভাড়া ৫৮ হাজার টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিমান ভাড়াসহ সব খরচ মিলিয়ে চলতি বছরে হজ প্যাকেজ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্রমাগত ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় হজযাত্রীদের আর্থিক চাপ বেড়েছে। অনেকে প্রস্তুতি নিয়েও ব্যয় বৃদ্ধির কারণে হজে যেতে পারবেন না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে হজের বিমান ভাড়া কমিয়ে পুনরায় নির্ধারণ করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)। হজযাত্রার খরচের বড় একটি অংশ যায় ফ্লাইটের টিকিটে। এ বছর বিমান ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে হজের খরচ। প্রতি বছরই বিমানের ভাড়া নিয়ে সরব হজ এজেন্সি ও ট্রাভেল এজেন্টরা। বিগত বছরেও ভাড়া বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছিল হাব। এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি আটাব বিমান ভাড়াসহ প্যাকেজ মূল্য পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেছে।
জানা গেছে, হজযাত্রার খরচের বড় একটি অংশ যায় ফ্লাইটের টিকিটের জন্য। দেশে হজ ফ্লাইটের ভাড়া নির্ধারণ হয় রাষ্ট্রয়াত্ত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রস্তাবিত ভাড়ার ভিত্তিতে। হজ এজেন্সি মালিক ও ট্রাভেল এজেন্টদের দাবি, রাষ্ট্রয়াত্ত্ব এয়ারলাইনস বিমান এককভাবে অতিরিক্ত মুনাফায় ভাড়া প্রস্তাব করে। বিমান ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে হজ এজেন্সি মালিকরা। হাব ও আটাব নেতারা বলছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সারা বছরের লোকসানের ধকল কাটায় হজযাত্রীদের ওপর অতিরিক্ত ভাড়ার বোঝা দিয়ে। হজ ফ্লাইট থেকে বিমান ৮০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত মুনাফা করে। বিমানের আয়ের ১৫ শতাংশ হয় হজ ফ্লাইট থেকে। বিমান বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১০ থেকে ২০ কোটি টাকা মুনাফা রেখে ভাড়া প্রস্তাব করলে হজযাত্রীদের ওপর আর্থিক চাপ কমবে। আটাব সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ হজযাত্রীদের নির্ধারিত বিমান ভাড়াসহ প্যাকেজ মূল্য পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেন।
আবেদনে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) জানিয়েছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে ২০১৫ সালে হজের সর্বনিম্ন খরচ ছিল ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা। ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৪ হাজার টাকা। ২০১৭ সালে সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল ৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়া পুরোপুরি বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে হজ প্যাকেজের মূল্য ছিল ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। চলতি বছরে তা ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হিসাব বিবেচনায় নিলে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে হজ ব্যয় বেড়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৫ টাকা। এ বছর সৌদি সরকার হজের আনুষঙ্গিক ব্যয় কমিয়েছে। ২০১৭ হতে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে হজযাত্রীদের নির্ধারিত বিমান ভাড়া ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালে নির্ধারিত বিমান ভাড়া পূর্বের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিমান ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে হজ প্যাকেজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সৌদি রিয়ালের মূল্য হিসাব করে সৌদি আরবের খরচ নির্ধারণ করা হলেও হজের সময় রিয়ালের মূল্য টাকার বিনিময় মূল্যের হার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া বিশ্বে আর্থিক মন্দার কারণে যে ডলার সংকট বিরাজ করছে তার প্রভাব হজযাত্রীদের আর্থিক চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে এবং ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ থেকে হাজীগণ হজ করতে যাওয়ার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলবে। বিমান ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারিত করা হলে হজযাত্রীদের আর্থিক ও মানসিক চাপ অনেকটাই হ্রাস পাবে।
এ প্রসঙ্গে আটাবের মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফবলেন, ‘যেভাবে হজের খরচ বেড়েছে তাতে জায়গা জমি বিক্রি করা ছাড়া অনেকের পক্ষে হজ করা সম্ভব হবে না। বিমান ভাড়া এক বছরেই বেড়েছে ৫৮ হাজার টাকা। এ কারণে হজযাত্রীদের জন্য বিমান ভাড়া ও হজের খরচ পুনরায় সহনীয় মাত্রায় নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।’