সুলতানা রাজিয়া হেলেন:
আল্লাহ যখন তাঁর খলিফা হিসাবে মানুষ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখনই মালায়েকগণ আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যে, মানুষ নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত করবে, হানাহানি ও রক্তপাত ঘটাবে (সুরা বাকারা-৩০)। আল্লাহও মানুষকে এই দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও রক্তারক্তি থেকে বাঁচানোর জন্য যুগে যুগে হেদায়াহ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন (সুরা বাকারা-৩৮)। ইবলিস আল্লাহকে চ্যালেঞ্জ দিল যে, সে মানুষকে এই হেদায়াহ থেকে, সিরাতাল মুস্তাকিম থেকে সরিয়ে দিবে অর্থাৎ মানুষকে দিয়ে সে অন্যায়, অবিচার, দ্বন্দ্ব-সংঘাত, রক্তারক্তি করাবে (সুরা আরাফ-১৬, ১৭)। এ থেকে বোঝা গেল- আল্লাহ চান মানুষের মাঝে ঐক্য, ইবলিস চায় অনৈক্য। আল্লাহ চান শান্তি, ইবলিস চায় অশান্তি, আল্লাহ চান ভ্রাতৃত্ব আর ইবলিস চায় শত্রুতা, হানাহানি, সংঘাত।
আল্লাহ যুগে যুগে যত নবী-রসুল প্রেরণ করেছেন তাদেরকে এই একটি আদেশ দিয়েই প্রেরণ করেছেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ (হুকুমদাতা) নেই (সুরা আম্বিয়া-২৫)া। অর্থাৎ এটাই সেই হেদায়াহ, সেই তওহীদ যা আল্লাহ যুগে যুগে মানুষের মুক্তির জন্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সকল নবী-রসুল মানুষদেরকে এই তওহীদ বা হেদায়াহর দিকেই ডেকেছেন।
যখনই মানুষ অনৈক্য, হানাহানি, অন্যায়, অবিচার, যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হয়েছে তখনই তাদেরকে পুনরায় ন্যায়, সুবিচার, শান্তিতে ফিরিয়ে আনার জন্য আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক হেদায়াহ ও সত্যদীন দিয়ে নবী-রসুলগণকে পাঠিয়েছেন। নবী-রসুলগণ ঐ হেদায়াহ ও সত্যদীন সমাজে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংগ্রাম করেছেন। এটাই ছিল তাঁদের মূল দায়িত্ব (সুরা তওবা-৩৩, ফাতাহ-২৮, সফ-৯)। ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, জাতীয় জীবন, সামষ্টিক জীবন এক কথায় জীবনের বিভিন্ন অঙ্গনে আমরা যে নীতিমালাগুলো অনুসরণ করে চলি তার সমষ্টিই হলো জীবনব্যবস্থা। এই নীতিমালা হতে পারে দুই ধরনের। এক- আল্লাহর দেওয়া নীতিমালা, দুই- নিজেদের তৈরি করে নেওয়া নীতিমালা। এখন মানুষের সামষ্টিক জীবনে আল্লাহর দেওয়া নীতিমালা, গাইডলাইন অনুসরণ করার সিদ্ধান্তই হলো- হেদায়াহ। নবী-রসুলগণ মানুষের কাছে প্রথমেই এই স্বীকৃতি চেয়েছেন যে, “তোমরা বলো- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অর্থাৎ আমরা আল্লাহর হুকুম-বিধান ছাড়া আর কারও হুকুম-বিধান মানব না।” মানুষ যখন নবী-রসুলগণের এই আহ্বান গ্রহণ করে নিয়েছে তখন আল্লাহর দেওয়া নীতিমালার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে নতুন সমাজ। সেই সমাজে ন্যায়, সুবিচার, শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কিন্তু নবীগণের ওফাতের পর দীনের অতি বিশ্লেষণ, দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি, উদ্দেশ্য ভুলে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে দীনটা আবার বিকৃত হয়ে গেছে। সমাজ আবার দ্বন্দ্ব-সংঘাত, হানাহানি, রক্তারক্তিতে ডুবে গেছে। আল্লাহ আবার পথভ্রষ্ট জাতির জন্য হেদায়াহ ও সত্যদীন দিয়ে নতুন রসুল পাঠিয়েছেন। এভাবে আমাদের প্রিয় নবী, আখেরি নবী মোহাম্মাদুর রসুলাল্লাহ (সা.) পর্যন্ত নবী-রসুল আগমনের ধারা অব্যাহত থেকেছে। কারণ একটাই- মানবজাতি যাতে পৃথিবীতে পরম শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
যখনই পৃথিবীতে নতুন কোনো নবীর আগমন ঘটেছে তখন তাকে সম্মুখীন হতে হয়েছে তার পূর্ববর্তী নবীর বিকৃত ব্যবস্থার অনুসারীদের। নবী-রসুলগণ ঐ বিকৃত ধর্মের অনুসারীদের ডাক দিয়েছেন তওহীদের দিকে, কলেমার দিকে। কলেমার প্রথম অংশ- ‘লা ইলাহ’ দ্বারা মূলত ধর্মগুরু, পুরোহিত শ্রেণিকে অস্বীকার করা হয়, রাজনৈতিক নেতৃত্ব অস্বীকার করা হয়, পুরোনো ব্যবস্থাকেই অস্বীকার করা হয় আর ‘ইল্লাল্লাহ’ দ্বারা পুরোনো ধর্মের ঐ বিকৃত প্রথাগুলোকে অস্বীকার করে আল্লাহর দেওয়া নতুন, সঠিক গাইডলাইন বা নীতিমালাকে স্বীকার করা হয়। আর কলেমার শেষ অংশ দ্বারা নতুন ঐ নবীকে সর্বময় নেতা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এজন্য নবী-রসুলগণ যখনই কলেমার বালাগ দিয়েছেন তখনই সবচেয়ে বেশি বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছেন পুরোনো ধর্মের ধর্মগুরু, পুরোহিতদের দ্বারা। দ্বিতীয়ত বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছেন সমাজের কর্তৃত্বকারী বা রাজনৈতিক নেতৃত্বের দ্বারা। এরপর বাধার সম্মুখীন হয়েছেন এই দুই নেতৃত্বের অন্ধ অনুসারীদের দ্বারা।
ধর্মীয় নেতারা দেখেছে সমাজে যদি আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় তাহলে তাদের কর্তৃত্ব শেষ হয়ে যাবে। এতদিন জনগণ তাদের ওরাসাতুল আম্বিয়া তথা নবীর উত্তরসূরী হিসাবে জেনে এসেছে আর আজ তাদের মিথ্যা জ্ঞানের অহংকার জাতির সামনে চূর্ণ হয়ে যাবে। তারা যে এতদিন আল্লাহর দেয়া দীনটাকে নিয়ে নিজেদের স্বার্থে ব্যবসা করে খাচ্ছিল তা আর করতে পারবে না তখন তারা নবীদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নবীদের আনা দীনের বিরোধিতা করেছে। অপরদিকে রাজনৈতিক নেতারা দেখেছে জনগণ নবীর পক্ষে চলে গেলে তাদের রাজনীতি শেষ হয়ে যাবে। এ কারণে মূলত নবী-রসুলদের সত্য প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা হয়ে এসেছে। তবে যুগে যুগে সত্য প্রচারকরা সবচেয়ে বেশি বিরোধিতার স্বীকার হয়েছেন ধর্মব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। ইবরাহিম (আ.), মুসা (আ.), ইসা (আ.), ইউসুফ (আ.) - এর যুগেও তাঁদের ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা বিরোধিতার স্বীকার হবার ইতিহাস পাওয়া যায়।
আমাদের শেষ রসুল (সা.) যখন মক্কায় আসলেন তখন আরব সমাজে গোত্রভিত্তিক শাসন চালু ছিল। গোত্রে গোত্রে সর্বদাই বিভিন্ন ছোটখাট বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগে থাকত। অন্যায়ের দিক থেকে সমাজে এমন এক অবস্থা বিরাজ করছিল যার নাম দেয়া হয়েছিল আইয়ামে জাহেলিয়াত তথা অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগ। চুরি, ডাকাতি, খুন, জখম, মদ, সুদ, ঘুষ, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন হর হামেশাই লেগে থাকত। রসুলাল্লাহর আগমন হয় অন্ধকারে নিমজ্জিত সে সমাজে সত্যের মশাল জ্বালাতে। রসুলল্লাহ (সা.) ছোটবেলা থেকেই তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্বে, চারিত্রিক মাধুর্যে, আমানতদারিতায়, সত্যবাদিতায় জনগণের মন জয় করেছিলেন। কিন্তু তিনি যখন জাতির সামনে তওহীদের ঘোষণা দিলেন তখন শুরু হলো সাংঘাতিক বিরোধিতা।
আবু জাহেল, আবু সুফিয়ানরা জানত তারা যদি রসুলের কথা মেনে নেয় তবে তাদের কর্তৃত্ব আর থাকবে না। আরেকটা বিষয় তাদের মধ্যে কাজ করেছিল তা হলো অহংকার। আবু জেহেল ছিল সে সমাজের সবচেয়ে বড় আলেম (আবুল হাকাম) আর রসুল ছিলেন নিরক্ষর (উম্মি)। আল্লাহ তার মতো আলেমকে সত্য না বুঝিয়ে সত্য বোঝাবেন একজন অশিক্ষিত, নিরক্ষর মানুষকে? এ অহংকার বোধের কারণেও আবু জেহেল, আবু সুফিয়ানরা রসুলাল্লাহকে মেনে নেয়নি। মক্কার কিছু মানুষ রসুলের কথার উপর ঈমান আনে। রসুলসহ রসুলের অনুসারীদের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন, অত্যাচার শুরু হয়। তবু রসুল নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যান। একটু সময়ের জন্যও নিজের দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে আসেননি। বছরের পর বছর অত্যাচার নিপীড়ন সহ্য করার পর অবশেষে আল্লাহর পক্ষ থেকে মদিনায় হিজরতের হুকুম আসে রসুলের উপর এবং সেখানে একটি ভূখণ্ডে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠিত হয়।
আস্তে আস্তে রসুল সকল বাধা উপেক্ষা করে সমগ্র জাজিরাতুল আরব তথা আরব উপদ্বীপে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর তিনি আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। তাঁর ওফাতের পর তাঁর হাতে গড়া উম্মতে মোহাম্মাদী, তাঁর সাহাবাগণ পৃথিবীর পানে ছড়িয়ে পড়লেন আল্লাহর দেওয়া সত্যদীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে। প্রায় একশ’ বছর চলল অব্যাহত সংগ্রাম। তারপর এমন একদল শাসক শ্রেণি আসলো যারা খলিফার আসনে বসে নিজেদেরকে ডুবিয়ে ফেলল পাশবিক ভোগ-বিলাসিতায়। জাতিগতভাবে দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বন্ধ হয়ে গেল। এরপর সময়ের সাথে সাথে দীনের মধ্যে আবারো বিকৃতি প্রবেশ করতে থাকে। বিগত ১৪০০ বছরে বিকৃত হতে হতে দীনটা বর্তমানে এমন একটা পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে এটাকে আর আল্লাহর রসুলের দেয়া দীন বলা যায় না। শুধু বিকৃত নয় বর্তমানে আমাদের সমাজে যে দীন, ইসলামটা চলে তা প্রকৃত ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী একটা ইসলাম। কীভাবে? ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি। অর্থাৎ একটা সমাজে ইসলাম আছে কি নেই তা বোঝা যায় ওই সমাজের মানুষকে দেখে, সামাজিক অবস্থা দেখে। যদি সমাজে চুরি-ডাকাতি চলে, হত্যা-রাহাজানি চলে, মিথ্যা-প্রতারণা চলে, হানাহানি-রক্তপাত চলে তাহলে বুঝতে হবে ইসলাম নেই। আর যদি ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, রুহামা, ভালোবাসা, সাম্য, ন্যায়, সুবিচার, শান্তি থাকে তাহলে ইসলাম আছে।
আমাদের সমাজে হরহামেশাই চুরি, ডাকাতি, হত্যা, রাহাজানি, মারামারি, সুদ, ঘুষ, মদ, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ চলে। এগুলো একেকটা জাহেলিয়াত। জাহেলিয়াত মানে অন্ধকার। রসুলাল্লাহ এ জাহেলিয়াতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন এবং তাঁর উম্মাহর উপর দায়িত্ব দিয়ে গেছেন ততক্ষণ সংগ্রাম চালিয়ে যেতে যতক্ষণ না সমগ্র পৃথিবী ইসলামের ছায়াতলে আসে। যে সমাজে এ সব জাহেলিয়াত চলে সে সমাজ ইসলামী সমাজ হতে পারে না। নব্যুওয়াতের ধারা বন্ধ হয়ে গেছে, আর তো নবী-রসুল আসবেন না কিন্তু আল্লাহ স্থায়ীভাবে মানবজতিকে তো আর জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত রাখতে পারেন না।
কারণ আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন একটা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে। মানুষকে আল্লাহ খলিফা হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব করবে, মানবজাতিকে শান্তিতে রাখবে। তাই তিনি পথহারা মানবজাতিকে সঠিক পথে তুলতে মাননীয় এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ রায়াজীদ খান পন্নীকে আবার হেদায়াতের জ্ঞান দান করলেন।
মাননীয় এমামুযযামান জাতির কাছে আল্লাহর দেয়া সত্যদীনের, তওহীদের ঘোষণা দিলেন। মানবজাতিকে অশান্তি থেকে মুক্তির পথ দেখালেন। মানবজাতিকে বললেন, পৃথিবীময় এত অশান্তির কারণ হলো মানবজাতি আল্লার হুকুম ত্যাগ করে মানুষের তৈরি, গায়রুল্লাহর তৈরি জীবনব্যবস্থা অনুসরণ করছে। এ পথে কোনোদিন শান্তি আসবে না। জাতির কাছে বই লিখে, হ্যান্ডবিল লিখে মুক্তির পথ তুলে ধরলেন। জাতিকে তওহীদের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হবার ডাক দিলেন। সবাইকে একটা প্ল্যাটফর্মে আনতে তিনি হেযবুত তওহীদ নামে একটা দল গঠন করলেন।
সত্যনিষ্ঠ মানুষ যারা বর্তমান সময়ের জাহেলিয়াত থেকে মুক্তির প্রহর গুনছিল তারা হেযবুত তওহীদের ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনের সাথে থেকে দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে শুরু করে। প্রতিনিয়ত দলে দলে মানুষ আন্দোলনের ছায়াতলে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু যুগে যুগে সত্যের বিরোধিতা করে এসেছে যে শ্রেণিটি তাদের উত্তরসূরীরা কিন্তু এ সময়েও নিজেদেরকে দাঁড় করালো সত্যের বিরোধিতায়। তারা হলো ধর্মব্যবসায়ী ধান্দাবাজ একটা শ্রেণি। এরা ধর্মের একটা মিথ্যা খোলস পরে আছে। জনগণের কাছে এরা ধর্মের একটা রূপ দাঁড় করিয়ে রেখেছে।
হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের কথাকে এরা জাতির কাছে পৌঁছাতে দিতে চায় না। কারণ এরা জানে তাহলে এদের রমরমা ধর্মব্যবসা আর চলবে না। জনগণের টাকায় এরা এতদিন চলেছে তা বন্ধ হয়ে যাবে। জনগণের কাছে এরা যে মিথ্যা ফতোয়া দিয়ে এসেছে, কোর’আনের আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এসেছে তা প্রকাশ হয়ে যাবে। তাই এরা হেযবুত তওহীদের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়েছে। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ধর্মব্যবসা নিষিদ্ধ করেছেন (সুরা বাকারা-১৭৪)। কিন্তু ধর্মব্যবসায়ীরা মহাসমারোহে ধর্মব্যবসা করে খাচ্ছেন। হেযবুত তওহীদ ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে দলিল পেশ করার কারণে জনগণ ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে কিন্তু তারা তো চায় না তাদের রমরমা ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাক। তাই তারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। হেযবুত তওহীদের দেয়া অকাট্য যুক্তি, দলিল খণ্ডন করতে না পেরে তারা মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে।
হেযবুত তওহীদ যা বলেনি তা জনগণের কাছে বলে বেড়াচ্ছে। হেযবুত তওহীদের কথা টুইস্ট করে জনগণের কাছে প্রচার করছে। হেযবুত তওহীদের মাননীয় এমামসহ সসস্য-সদস্যাদের চরিত্র হননের জন্য বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে সোস্যাল মিডিয়ায়। জনগণের কাছে মিথ্যা হ্যান্ডবিল বিতরণ করে ভুল বোঝানো হচ্ছে। মসজিদের মাইকে তারা গুজব রটিয়ে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর হামলা করছে, সদস্যদের জানমালের ক্ষতি করছে। হেযবুত তওহীদের কার্যক্রমকে ব্যহত করতে বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশ পণ্ড করেছে। ধর্মব্যবসায়ীদের অন্ধ অনুসারীরাও তাদের পক্ষ নিয়ে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হচ্ছে।
হেযবুত তওহীদের বালাগ কার্যক্রমে তারা বাধা প্রদান করছে। কারণ একটাই জনগণ সত্য জেনে গেলে সবাই তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে, তাদের পরাজয় হবে। হেযবুত তওহীদ আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় হুকুম মেনে আল্লাহর দীনের জন্য সংগ্রাম করছে, সমাজ থেকে যাবতীয় অন্যায় নির্মূল করে সমাজে ন্যায়-সুবিচার-শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। হেযবুত তওহীদ বিগত ২৭ বছরে একটাও অন্যায় করে নি। কিন্তু অপপ্রচারকারীদের কারণে জনগণ প্রতিনিয়ত আন্দোলনের ব্যাপারে ভুল বার্তা পাচ্ছে। তবু হেযবুত তওহীদ কোনো মুহূর্তের জন্য থেমে নেই। প্রয়োজনে আল্লাহর দীনের জন্য আন্দোলনের সদস্যরা জীবন দিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।
সত্যের বিরোধিতা যুগ যুগ ধরে হয়ে এসেছে এবং অবশেষে সত্যরই বিজয় হয়েছে। সত্যকে দমিয়ে রাখার সাধ্য কারো নেই। হেযবুত তওহীদ সমুদ্র পরিমাণ মিথ্যার মাঝে এক ফোটা সত্য। আর এ সত্যের শক্তি এমন যা সমুদ্র পরিমাণ মিথ্যাকে মুহূর্তেই ধূলিসাৎ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট ইনশাল্লাহ।
[লেখিকা: অনলাইন প্রচার সম্পাদক, হেযবুত তওহীদ। যোগাযোগ: ০১৬৭০১৭৪৬৫১, ০১৭১১৫৭১৫৮১, ০১৬৭০১৭৪৬৪৩]