পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে পরিচিত ব্রাজিলের অ্যামাজন জঙ্গল। সেখানে আছে টেফে লেক। সেই লেকের পানিতে প্রত্যেকদিন ভেসে উঠেছে একাধিক মৃত ডলফিন। আশঙ্কাজনক এ ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মামিরাউয়া ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের রিপোর্টের সত্যতা স্বীকার করেছে ব্রাজিলিয়ান মিনিস্ট্রি অব সায়েন্স। ওই প্রতিষ্ঠান জানায়, এ পর্যন্ত শতাধিক ডলফিন মারা গেছে। এই বিপুল ডলফিনের মৃত্যু অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং তা দেশটির জীববৈচিত্রের পক্ষে যথেষ্ট আশঙ্কাজনক।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ডলফিনগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনও তদন্তসাপেক্ষ, তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিষয়টি অবশ্যই দেশের সাম্প্রতিক খরা ও লেকের পানির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। অ্যামাজনের জঙ্গল হলো বিশ্বের বৃহত্তম ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট, যা ৫.৫ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটারের বেশি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। সুবিশাল এই জঙ্গলের আয়তন প্রায় গোটা অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের সমান। চরম আবহাওয়ার কারণে ইতোমধ্যেই অ্যামাজনের নদী ও পানিরস্তর হ্রাস পেয়েছে। মাঠঘাট শুকিয়ে কাঠ, ফেটে যাচ্ছে রাস্তা।
জানা গেছে, চলমান খরার কারণে সেখানকার অন্তত এক লাখ মানুষ বড় সমস্যায় পড়েছেন। পানিরস্তর কমে যাওয়ায় নৌকা চলাচলও প্রায় বন্ধ। যে সব জায়গায় খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যাওয়ার জন্য পানিপথই ছিল একমাত্র ভরসা, সেরকম অনেক এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এই এলাকার বাসিন্দাদের সাহায্য করার জন্য সরকারের তরফে ইতোমধ্যে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। যে কয়টি ডলফিন এখনও বেঁচে আছে সেগুলোকে নদী বা বড় জলাধারে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
এদিকে পরিবেশবিদরা ইতোমধ্যেই এ ঘটনার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মামিরাউয়া ইনস্টিটিউটের গবেষক আন্দ্রে কোয়েলহো জানিয়েছেন, অন্যান্য নদীতে ডলফিন স্থানান্তর করা খুব একটা নিরাপদ নয় কারণ, যে কোনো বন্য প্রাণীদের অন্যত্র ছেড়ে দেওয়ার আগে সেখানে টক্সিন বা ভাইরাস রয়েছে কিনা তা যাচাই করা জরুরি।