সময় মতো সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে জ্বরে মারা গেছে দুই সন্তান। হাসপাতাল থেকে সন্তানের মরদেহ বাসায় নেওয়ার জন্য হন্য হয়ে অ্যাম্বুলেন্স খুঁজছিলেন বাবা-মা। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স না মেলায় দুই সন্তানের মরদেহ কাঁধে নিয়ে হাসপাতাল থেকে ১৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে বাড়িতে পৌঁছালেন তারা। অত্যন্ত মর্মান্তিক এই ঘটনা ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশে ঘটেছে বলে বৃহস্পতিবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্রের আহেরি তালুকার এক দম্পতি তাদের দুই সন্তানের মরদেহ কাঁধে নিয়ে ১৫ কিলোমিটার হেঁটে বাড়িতে পৌঁছেছেন। কয়েক দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর সময় মতো যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে মারা যায় তাদের দুই সন্তান।
মৃত সন্তানকে কাঁধে করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার মর্মান্তিক দৃশ্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, মৃত সন্তানকে কাঁধে নিয়ে কান্না করতে করতে বাড়ির পথে হাঁটছেন বাবা-মা। ওই দুই সন্তানের বয়স ১০ বছরের নিচে। জঙ্গলের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া কর্দমাক্ত পথ ধরে নিজ সন্তানের মরদেহ কাঁধে নিয়ে বাবা-মায়ের বাড়িতে ফেরার এই ভিডিও শেয়ার করেছেন মহারাষ্ট্রের বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা বিজয় ওয়াদেত্তিওয়ার।
ভিডিওটি শেয়ার করে বিজয় ওয়াদেত্তিওয়ার লিখেছেন, গত কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল দুই ভাই। কিন্তু তারা সময় মতো সঠিক চিকিৎসা পায়নি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে তাদের অবস্থা গুরুতর হয়। পরে দু’জনই মারা যায়।
তিনি বলেছেন, এমনকি পাত্তিগাঁওয়ের গ্রামের বাড়িতে মরদেহ নেওয়ার জন্যও কোনও অ্যাম্বুলেন্স পায়নি তারা। পরে বাধ্য হয়ে ওই বাবা-মা দুই সন্তানের মরদেহ কাঁধে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে ১৫ কিলোমিটার কর্দমাক্ত পথ হেঁটে বাড়িতে যান। এই ঘটনার মাধ্যমে মহারাষ্ট্রের গদচিরোলির স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ভয়াবহ বাস্তবতা আজ আবার সামনে এসেছে।
এর আগে, গত ১ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের আমরাবতি এলাকায় গর্ভবতী আদিবাসী এক নারী তার বাড়িতে মৃত সন্তানের জন্ম দেন। পরে ওই নারীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়। তাকে স্থানীয় হাসপাতাল নেওয়ার জন্য সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তীব্র যন্ত্রণায় মারা যান তিনি।
এই দুই ঘটনায় দেশটিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনেকেই স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তীব্র সমালোচনা করে পোস্ট করছেন। তবে এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত রাজ্য কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।
সূত্র: এনডিটিভি।