ইরাকের উত্তরাঞ্চলে কুর্দি বিদ্রোহীদের ওপর বেশ কয়েক দফায় বিমান হামলা চালিয়েছে তুরস্ক। তুর্কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পর এই হামলা চালানো হয়। তুরস্কের সরকার বলেছে, কুর্দি বিদ্রোহীদের ওপর চালানো ওই হামলায় ২০টি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা হয়েছে।
এছাড়া নিষিদ্ধ পিকেকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অনেক জঙ্গিকে ‘নিরপেক্ষ’ করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। সোমবার (২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
পিকেকে বলেছে, রাজধানী আঙ্কারায় রোববার সকালের ওই বোমা হামলাটি তাদের সাথে যুক্ত একটি গ্রুপ চালিয়েছে। হামলার সময় ওই গ্রুপের একজন সদস্য বিস্ফোরণে নিজেকে উড়িয়ে দেয়। দ্বিতীয় হামলাকারী পুলিশের গুলিতে নিহত এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।
কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচিত। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পিকেকে-এর ব্যবহৃত গুহা, ডিপো এবং বাঙ্কারকে লক্ষ্য করে রোববারের বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে এএফপি বলেছে, ‘পিকেকে এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী উপাদানগুলোকে নিরপেক্ষ করা, আমাদের জনগণ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে উত্তর ইরাক থেকে হওয়া সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধ করা এবং আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই’ ছিল এই অভিযানের লক্ষ্য।
কুর্দি বার্তাসংস্থা রুদাও বলেছে, ইরানি সীমান্তের কাছে মাউন্ট কান্দিলকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এই এলাকাটিকে পিকেকে-এর শক্ত ঘাঁটি বলে মনে করা হয়।
এর আগে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় রোববার সকালে ভয়াবহ বোমা হামলা চালায় দুই সন্ত্রাসী। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভবনের সামনে এই আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে দুই হামলাকারী ছাড়া আর কেউ নিহত হয়নি। তবে দ্বিতীয় হামলাকারীকে হত্যার আগে তুরস্কের দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।
পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এই বিস্ফোরণ ঘটে। ইমমর্টালস ব্যাটালিয়ন নামে একটি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, তারা পার্লামেন্টের কাছে অবস্থিত মন্ত্রণালয়কে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
পরে পার্লামেন্টের উদ্বোধনী ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসবাদের চূড়ান্ত ঝাঁকুনি’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের শান্তি ও নিরাপত্তা নষ্টের লক্ষ্যে নিকৃষ্ট লোকেরা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি এবং তারা কখনোই সেটি করতে পারবে না।’