Date: October 30, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / আন্তর্জাতিক / ‘এখন আমরা তাদের কবর দিচ্ছি…গতকাল ছিল বিয়ে আর আনন্দ ’

‘এখন আমরা তাদের কবর দিচ্ছি…গতকাল ছিল বিয়ে আর আনন্দ ’

September 28, 2023 12:33:18 PM   আন্তর্জাতিক ডেস্ক
‘এখন আমরা তাদের কবর দিচ্ছি…গতকাল ছিল বিয়ে আর আনন্দ ’

ইরাকের নিনেভেহ প্রদেশের হামদানিয়ায় গত মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১৩ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

আনন্দ-উল্লাসে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে—বর-কনে ও তাদের পরিবারের সদস্যরা এদিন একটি হলরুমে উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু সেই আনন্দ এখন বিষাদে রূপ নিয়েছে।

ভয়াবহ এই ঘটনায় আত্মীয়-স্বজন হারানোর বেদনায় এখন হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন অনেকে।

বুধবার স্থানীয় একটি মর্গে আত্মীয়দের নিথর মরদেহ নিতে আসা কয়েকজন জানিয়েছেন নিজেদের মানসিক যন্ত্রণার কথা। তাদের একজন মারিয়াম খেদর। তিনি মর্গের সামনে উপস্থিত হয়েছেন— নিজের ২৭ বছর বয়সী মেয়ে ও তিন নাতির মরদেহ নিতে। মারিয়াম বলেছেন, ‘এটি বিয়ে ছিল না… এটি ছিল নরক।’

ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে যারা বেঁচে গেছেন তারা জানিয়েছেন, বিয়ের অনুষ্ঠান শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা পর একটি আতশবাজি থেকে হলরুমের ছাদে থাকা ডেকোরেশনে আগুন লাগে। ওই সময় স্লো ড্যান্সের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বর-কনে।

আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া ইমাদ ইয়োহানা (৩৪) বলেছেন, ‘আমরা দেখছিলাম আগুন জ্বলছে, হলরুমের বাইরে যাচ্ছিল। যারা দ্রুত বের হতে পেরেছিলেন শুধুমাত্র তারাই বের হতে পেরেছিলেন; যারা পারেননি তারা আটকে যান।’

মর্গের বাইরে অপেক্ষমান অপর এক নারী বলেছেন, ‘আমি আমার মেয়ে, তার স্বামী এবং তাদের তিন বছর বয়সী সন্তানকে হারিয়েছি। তারা সবাই পুড়ে গেছে। এখন আমার রিদয় পুড়ে যাচ্ছে।’

ইউসুফ নামের অপর এক ব্যক্তি বলেছেন, আগুন লাগার পর কেউ আর কোনো কিছু দেখতে পাচ্ছিলেন না; কারণ সেখানকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তখন তিনি তার নাতির হাত ধরে কোনো মতে বের হয়ে আসেন। কিন্তু তার স্ত্রী আর বের হতে পারেননি।

বুধবারই কারাকাসের একটি খ্রিস্টান কবরস্থানে নিহতদের সমাহিত করা শুরু হয়। তখন সেখানে উপস্থিত হন হাজার হাজার মানুষ। মৃতদের কফিনে ভরে কাঁধে করে ও ট্রাকে করে নিয়ে আসেন আত্মীয়-স্বজনরা।

ভয়াবহ এই ট্র্যাজেডির আগে মার ইয়োহানা চার্চে বিয়ে পড়ানো হয় ওই বর-কনের। তাদের বিয়ের কাজটি সম্পন্ন করেন ওই চার্চের যাজক হানি আল-কাসমোসা। তিনি বলেছেন, ‘গতকাল এখানে ছিল বিয়ে আর আনন্দ… আজ আমরা তাদের কবর দিচ্ছি।’