দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট হচ্ছে কোপা আমেরিকা। দশটি দেশ অংশ নেয় এই টুর্নামেন্টে। ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে পুরাতন টুর্নামেন্ট এটি। কখনো চার বছর কখনো এক বছর পরেও আয়োজিত হয়েছে এই টুর্নামেন্ট।
তবে এবার দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে লাতিনের এই টুর্নামেন্ট; কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকার এত দেশ থাকতে যুক্তরাষ্ট্রে কেন কোপা আমেরিকা আয়োজিত হচ্ছে সেটি নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে।
৪৮তম কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর আগের ৪৭টি টুর্নামেন্টের মাত্র একটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে ২০১৬ সালে, সেটিও যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছিল। যেটি ছিল বিশেষ কোপা আমেরিকা।
চলতি কোপা আমেরিকায় দক্ষিণ আমেরিকার দশটি দলের পাশাপাশি উত্তর আমেরিকার ছয়টি দলও অংশ নিচ্ছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে কনকাকাফ ও কনমেবল যৌথভাবে ঘোষণা করে যে ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে। মূলত একটি চুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত হচ্ছে টুর্নামেন্টটি।
চুক্তির অংশ হিসেবে চারটি দক্ষিণ আমেরিকার নারী দল কনকাকাফ নেশন্সের নারী গোল্ড কাপে অংশ নিয়েছিল। সেখানে কলম্বিয়া, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে ও আর্জেন্টিনার নারী দল খেলে। যুক্তরাষ্ট্রের নারী দল ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা জয়লাভ করে।
এই চুক্তিতে আরো একটি টুর্নামেন্টের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছিল, যেখানে দুই মহাদেশ থেকে দুটি করে ক্লাব নিয়ে হবে টুর্নামেন্টটি। যদিও এখনো শুরু হয়নি সেই টুর্নামেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রে কোপা আমেরিকা আয়োজনের ফলে আর্থিক দিক থেকেও অনেক লাভবান হবে কনমেবাল। ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকা অতীতে হওয়া সকল টুর্নামেন্টের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে উপস্থিতি, টেলিভিশন রাইটস, ডিজিটাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষের অংশগ্রহণ এবং রাজস্ব আয়ের দিক দিয়ে।
২০২৪ কোপা আমেরিকার ক্ষেত্রে অতীতের সবকিছু ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে আগে ১০-১২টি দল খেলতো, এখন সেখানে ১৬টি দল খেলছে। এখানে আয়োজক কমিটির আরো রাজস্ব ও টিভি নেটওয়ার্কে বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অনেক দক্ষিণ আমেরিকান বসবাস করে। তারা সবাই খেলা দেখতে আসবে। এছাড়া স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের প্রতিবেশি দেশ মেক্সিকোর অনেক বড় সমর্থক রয়েছে এই দেশটিতে।
ভেন্যুর দিক দিয়েও আনা হয়েছে বৈচিত্র্যতা। কোপায় খেলা হবে ১৪টি স্টেডিয়ামে যেখানে মাত্র ৩টি স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৬০ হাজারের নিচে। এই টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চায় তারা ২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।