ভয়াবহ বন্যায় প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের দেরনা শহরের মেয়রের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। গত ১২ সেপ্টেম্বর দেরনায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের আঘাতে দু’টি বাঁধ ধসে পড়ে। এরপর সেই বাঁধের পানি শহরের দিকে নেমে আসে। তখন সেখানে সুনামির মতো বন্যার সৃষ্টি হয়।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, স্থানীয় মেয়র ও পৌরসভার অবহেলা ও গাফিলতির কারণে এত মানুষের প্রাণ গেছে। আর ভয়াবহ বন্যা আঘাত হানার এক সপ্তাহ পর গতকাল সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শহরটির বহিষ্কৃত মেয়র আব্দুলমেনাম আল-ঘাইতির বাড়ির সামনে জড়ো হন সাধারণ মানুষ। তারা দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে স্লোগান দেন।
দায়িত্বে অবহেলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন শত শত মানুষ
এরপর এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা মেয়রের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের সরকারের মন্ত্রী হিকেম আবু চাকিওয়াত বলেছেন, মেয়র আব্দুলমেনাম আল-ঘাইতিকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ঘাইতির বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়া পূর্ব লিবিয়ার স্বঘোষিত সরকারের সংসদের প্রধান আগুইলা সালেহর বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভকারীরা বিখ্যাত সাহাবা মসজিদের সামনে জড়ো হন। এ সময় অনেককে স্লোগান দিতে শোনা যায়, ‘আগুইলা তোমাকে আমরা চাই না। লিবিয়ার সবাই ভাই ভাই।’ তারা একক ও কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে দেশ পরিচালনার দাবি জানান।
লিবিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করা হয়। তার সেই হত্যাকাণ্ডের পর গৃহযুদ্ধের ভেতর পড়ে যায় লিবিয়া। যার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চলে একটি ও পূর্বাঞ্চলে অপর একটি স্বঘোষিত সরকার লিবিয়াকে শাসন করছে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, যদি ওই বাঁধ দু’টি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হতো তাহলে হয়ত এত মানুষের মৃত্যু হতো না।
এদিকে লিবিয়ার রেড ক্রসের তথ্য অনুযায়ী, ভয়াবহ এ বন্যায় ১১ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজারের কাছাকাছি।