সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে আইফোন ব্যবহারের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে চীন। আর এমন পরিকল্পনার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর মাত্র দুই দিনে অ্যাপলের শেয়ার বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে ২০০ বিলিয়ন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) অ্যাপলের শেয়ারের মূল্য ২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে যায়।
চীনের এমন পরিকল্পনা সামনে আসার পর অ্যাপলের বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগে পড়েছেন— বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশে কতটা ব্যবসা করতে পারবে অ্যাপল।
গত বুধবার অ্যাপলের শেয়ারে গত এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় দরপতন দেখা যায়। আর এ দরপতনের পর মাত্র দুই দিনে প্রতিষ্ঠানটি ২০০ বিলিয়ন ডলার হারায়। ডো জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়ালের অ্যাভারেজে বর্তমানে অ্যাপলের শেয়ার বাজার সবচেয়ে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
আইফোনের ওপর চীনের এ নিষেধাজ্ঞা অ্যাপলের জন্য একটি অমঙ্গলজনক সতর্কতা সংকেত বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চীন হলো অ্যাপলের সর্ববৃহৎ বৈদেশিক বাজার। গত বছর অ্যাপল যত লাভ করেছিল তার এক-পঞ্চমাংশই এসেছিল চীন থেকে। কোন দেশে কত প্রোডাক্ট বিক্রি করা হয়— সে বিষয়টি প্রকাশ করে না অ্যাপল। তবে প্রযুক্তিবিষয়ক বিশ্লেষক সংস্থা টেকইনসাইটস জানিয়েছে, গত চার মাসে অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চীনে বেশি আইফোন বিক্রি করেছে। এছাড়া অ্যাপল তাদের বেশিরভাগ পণ্যই চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎপাদন করে থাকে।
গত বুধবার প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল জানায়, চীন কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তাদের আইফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং কর্মকর্তারা কর্মীদের এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে বিভিন্ন চ্যাটিং গ্রুপ ও মিটিংয়ের মাধ্যমে অবহিত করছেন।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার আরেক প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানায়, আইফোন ব্যবহারের এ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বড় রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোতেও নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পেট্রোচায়না। এই প্রতিষ্ঠানটিতে কয়েক লাখ মানুষ কাজ করেন। এছাড়া চীনের অর্থনীতির বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে পেট্রোচায়না।
ব্যাংক অব আমেরিকার এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছে, চীনের সবচেয়ে বড় মুঠোফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে বাজারে তাদের নতুন মুঠোফোন এনেছে। আর এ বিষয়টি চিন্তা করে আইফোনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হুয়াওয়ের নতুন মুঠোফোনটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জ্যাক সুলিভান জানিয়েছে, তারা মুঠোফোনটি সম্পর্কে তদন্ত করছেন। চীন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এ ফোনটি উৎপাদন করেছে কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তারা।