নাইজারে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে দূতাবাসের ভেতর জিম্মি করে রেখেছে নাইজারের সামরিক জান্তা জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি অভিযোগ করেছেন, দূতাবাসের ভেতর নাইজারের সেনারা কোনো খাবারও নিতে দিচ্ছেন না।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পূর্বাঞ্চলের শহর সেমুর-এন-অক্সিসে সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য জানান ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে, আমাদের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনৈতিক কর্মকর্তারা ফ্রান্সের দূতাবাসে কার্যত জিম্মি আছেন। জান্তার সদস্যরা খাবার নিতে দিচ্ছে না।’
ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদূত এখন সেনাবাহিনীর জন্য বরাদ্দকৃত রেশনের খাদ্যপণ্য খেয়ে বেঁচে আছেন।
তিনি আরও বলেছেন, ‘রাষ্ট্রদূত বাইরে যেতে পারছেন না। তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং খাবার দেওয়া হচ্ছে না।’
গত ২৬ জুলাই কোনো রক্তপাত ছাড়াই পশ্চিমা ও ফ্রান্সপন্থি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক জান্তা। এর কয়েকদিন পর ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নাইজার ছাড়ার নির্দেশ দেয় তারা। তবে ম্যাক্রোঁর নির্দেশনায় রাষ্ট্রদূত সালভিন ইত্তে সেই নির্দেশনা মানেননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জান্তা তার ভিসা বাতিল করে দেয় এবং পুলিশকে নির্দেশ দেয়— তাকে যেন নাইজার থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়।
ফ্রান্সের দাবি, তারা জান্তার দেওয়া এ নির্দেশনা মানবে না, কারণ জান্তার এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়ার এখতিয়ার নেই। তারা আরও জানিয়েছে, শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট বাজোম এ ধরনের নির্দেশ দিলে তারা রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়ে যাবে।
নাইজারে বর্তমানে ফ্রান্সের প্রায় দেড় হাজার সেনা রয়েছে। ক্ষমতা দখলের পর সামরিক জান্তা এসব সেনাকে প্রত্যাহার করে নিয়ে যেতে বলেছে। তবে ফ্রান্স এখনো এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
এদিকে গত সপ্তাহে জান্তার মুখপাত্র কর্নেল আমাদু আব্দররমান এক সংবাদসম্মেলনে দাবি করেন, পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে ফ্রান্স যুদ্ধাস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম জড়ো করছে যেন নাইজারের ওপর হামলা চালানো যায়।
নাইজারে সেনা রেখে মূলত পশ্চিম আফ্রিকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চায় সাবেক ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্স। গত দুই বছরে মালি ও বুরকিনা ফাসোতেও সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয় এবং ফ্রান্সের সেনাদের বের করে দেয়। এরপর এসব সেনা নাইজারে অবস্থান নেয়। এখন নাইজার থেকেও যদি ফ্রান্সকে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিতে হয় তাহলে পশ্চিম আফ্রিকার উপর থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে।