ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনাইটেড নেশনস প্যালেস্টাইনিয়ান রেফিউজি এজেন্সির তহবিলে (আনরোয়া) অর্থ সহায়তা প্রদান বন্ধ করা বিষয়ক একটি বিল আটকে দিয়েছে সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ।
বিভিন্ন উন্নত দেশের দেওয়া সহায়তার ভিত্তিতেই আনরোয়ার তহবিল চলে। সুইজারল্যান্ড প্রতি বছর এ তহবিলে ২ কোটি সুইস ফ্রাঁ (২ কোটি ৩০ লাখ ডলার) প্রদান করে থাকে।
গত সোমবার দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ফেডারেল অ্যাসেম্বলিতে এই অর্থ সহায়তা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে একটি বিল উত্থাপনের পর বিলটির পক্ষে ভোট দেন ১১৬ জন এবং বিপক্ষে ৭৮ জন এমপি ভোট দেন।
নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বিলটি পাঠানো হয় উচ্চকক্ষে। বৃহস্পতিবার সেটির ওপর ভোটও হয়। ভোট শেষে দেখা যায়, উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ২৩ জন এবং পক্ষে দিয়েছেন ২১ জন।
পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন আনরোয়ার শীর্ষ নির্বাহী ফিলিপ ল্যাজারিনি। শরণার্থী সহায়তা বিষয়ক বৈশ্বিক সংস্থা গ্লোবাল রেফউজি ফোরামের একটি সম্মেলন উপলক্ষে বর্তমানে জেনেভায় অবস্থান করছেন তিনি।
সেখানে সম্মেলনের অবসরে সাংবাাদিকদের ল্যাজারিনি বলেন, ‘এটা ইতিবাচক। আমি বেশ উদ্বিগ্ন ছিলাম।’
‘২ কোটি সুইস ফ্রাঁ সুইজারল্যান্ডের জন্য খুব বড় কোনো অঙ্ক নয়; কিন্তু এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনের, বিশেষ করে গাজার শরণার্থীদের জীবনরক্ষা ও মানবিক সহায়তার বিবেচনায় এই অর্থ খুবই জরুরি। উন্নত দেশগুলো যদি সহায়তার প্রবাহ অব্যাহত রাখে, কেবল তাহলেই গাজার শরণার্থীদের বাঁচানো সম্ভব হবে আমাদের পক্ষে।’
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন প্রায় ১৯ হাজাার বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর হার ৭০ শতাংশ।
গত প্রায় আড়াই মাস ধরে চলা যুদ্ধে সহায় সম্বল হারিয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।