স্বাস্থ্য ডেস্ক:
বছরের তিন-চার মাস নয়, বরং মশা নিধনে বছরব্যাপী কর্মসূচি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মশার প্রজনন ও বিস্তার রোধ করতে বর্তমান অবস্থায় প্রয়োজনে পাড়া, মহল্লা এবং ওয়ার্ডগুলোতে কমিটি গঠন করে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তবেই আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে পারব।
আজ বৃহস্পতিবার বিএসএমএমইউয়ের এফ ব্লকে (অনকোলজি বা ক্যান্সার ভবন) নতুন ডেঙ্গু কর্নার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনা মহামারির সময়ে দেশে যেমন রোগীদের চিকিৎসা সেবায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মুখ্য ভূমিকা রেখেছে, ডেঙ্গুতেও সেই ভূমিকা রাখছে। সেই লক্ষ্যেই নতুন করে আরও ২৮ শয্যার এই ডেঙ্গু কর্নারের উদ্বোধন করা হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, সাধারণ জরুরি বিভাগ, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, শিশু বিভাগে, কেবিন, ই ব্লক, এইচডিইউতে এরইমধ্যে ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হয়েছে। রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আজকে এফ ব্লকে ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হলো। বর্তমানে মোট ৬০ শয্যার ডেঙ্গু কর্নার চালু রয়েছে। তবে আজকের ২৮ শয্যা নিয়ে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য মোট শয্যা সংখ্যা ৮৮টিতে উন্নীত হয়েছে। প্রয়োজনে শয্যা সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। বর্তমানে ভর্তি আছেন ৫৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। প্রতিদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগে অনেক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশার লার্ভা ধ্বংসে অধিকতর গুরুত্ব দিতে হবে। এই কাজ শুধু সরকারের একার নয়, আমাদের সবার। তাই সবাইকে মশা নিধন এবং মশার প্রজনন ও বিস্তার রোধে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধি আসল সমাধান নয়, প্রকৃত সমাধান হলো মশা নিধন ও মশার কামড় থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে সচেতন হওয়া।
উপাচার্য বলেন, এখন আমাদেরকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে কাজ করতে হবে। নিজের ঘর নিজে পরিষ্কার রাখব। ছাদ পরিষ্কার রাখব। কোথাও পানি জমতে দেব না, প্লাস্টিকের পাত্রে পানি জমার সুযোগ দেব না। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ফুল হাত, ফুল পা জামা ও মোজা ব্যবহার করতে হবে। স্কুল কলেজ পরিষ্কার রাখতে হবে। বাসায় সবাইকে মশারি ব্যবহার করতে হবে।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য আরও বলেন, জ্বর হলেই এনএস ওয়ান পরীক্ষাটা করতে হবে। তাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কি না তা জানা যাবে। ডেঙ্গু হলেই সব রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে এমন নয়। চিকিৎসক যে রোগীকে ভর্তির পরামর্শ দেবেন তিনিই হাসপাতালে ভর্তি হবেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাউদ্দীন শাহ্, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রি. জে. ডা. রেজাউর রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দেবাশীষ বৈরাগী প্রমুখ।