পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলায় প্রায় ৬০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। গত শুক্রবার দুপুরে বুরকিনা ফাসোর প্রতিবেশী দেশ মালির সীমান্তঘেঁষা গ্রাম কারমাতে এই হামলা ঘটে।
কারমার নিকটবর্তী শহর ওউয়াহিগৌইয়ার আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর লামিনে কাবোরে ইতোমধ্যে হামলার এ ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। বার্তাসংস্থা এএফপি এই আইনজীবী বলেন, হামলাকারীরা কোন গোষ্ঠীর— তা এখনও জানা যায়নি, তবে তারা বুরকিনা ফাসোর সামরিক বাহিনীর ইউনিফর্ম পরে এসেছিল।
‘মূলত ডাকাতির উদ্দেশ্যেই এই হামলা হয়েছিল। এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে মানুষকে হতাহতের পাশাপাশি গ্রামটিতে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে হামলাকালীরা। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে,’ এএফপিকে বলেন তিনি।
পশ্চিম আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো বুরকিনা ফাসোর রাজনৈতিক অবস্থাও অস্থিতিশীল। ২০১২ সাল থেকে দেশটিতে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় আছে। এই গোষ্ঠীগুলো আবার আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আলকায়দা ও আইএসের সঙ্গে সম্পর্কিত। বর্তমানে দেশটির ৪০ শতাংশ এলাকা এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে আছে।
বুরকিনা ফাসোয় ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনী গত কয়েক বছর ধরে এসব গোষ্ঠীকে নির্মূলের চেষ্টা করছে। সেই চেষ্টা এখনও সফল হয়নি।
কারমার স্থানীয় লোকজন এএফপিকে জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুরের দিকে মোটরসাইকেল ও পিকআপ ট্রাকে করে শতাধিক সশস্ত্র মানুষ কারমাতে এসে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। তাদের সবারই পরনে ছিল দেশটির সামরিক বাহিনীর ইউনিফর্ম।
সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বর্তমানে ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর প্রধান প্রতিপক্ষ। এই গোষ্ঠীগুলোকে পুরোপুরি নির্মূল করতে বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ত্রাওরে সম্প্রতি একটি ডিক্রি জারি করেছেন। সেই ডিক্রিতে দেশটির প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
‘কোনো নাগরিক যদি এই নির্দেশ না মানেন, সেক্ষেত্রে ওই নাগরিককে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে,’ উল্লেখ করা হয়েছে সেই ডিক্রিতে।