ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পার্লামেন্ট ভবনে ‘রং বোমা’ হামলার ঘটনায় হট্টগোল ও উদ্ধত আচরণের অভিযোগে নজিরবিহীন এক পদক্ষেপে আরও ৭৯ এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভা ও উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা থেকে তাদের বরখাস্ত করা হয়। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার ১৪ এবং উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার একজন এমপিকে বরখাস্ত করা হয়। ফলে এ নিয়ে দেশটির সংসদের উভয়কক্ষ থেকে প্রায় ১০০ জন এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সোমবার লোকসভার ৩০ জন রাজ্যসভার ৩৫ এমপিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে লোকসভার ৩ জন এবং রাজ্যসভার ১১ জন এমপিকে রাখা হয়েছে ‘বিশেষ’ জোনে। পার্লামেন্টের প্রিভিলেজ কমিটির প্রতিবেদন আসার পর এই ১৪ এমপির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সোমবার বরখাস্ত হওয়া এমপিদের মধ্যে লোকসভার বিরোধী দলীয় নেতা এবং কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং উপনেতা গৌরব গগৈও রয়েছেন এবং রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনও রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ ডিসেম্বর লোকসভায় অধিবেশন চলাকালে স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে সেখানে ঢুকে রং বোমা ছোড়েন দুই যুবক। কেউই এ ঘটনায় হতাহত হয়নি, তবে গোটা অধিবেশন কক্ষে এ সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পার্লামেন্টে জঙ্গি হামলা হয়েছে— এই আতঙ্কে অনেক এমপি ছোটাছুটি শুরু করেন।
হামলাকারী দুই যুবক এবং তাদের সহযোগীদের ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু এই ঘটনার জের ধরে পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় এমপিরা ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র জবাবদিহিতা চান এবং দাবি করেন, অমিত শাহকে পার্লামেন্ট অধিবেশনে এ ব্যাপারে বক্তব্য দিতে হবে।
এই দাবির পক্ষে অধিবেশনের সভায় ‘হট্টগোলের’ প্রতিবাদে গত শনিবার ১৩ এমপিকে শীতকালীন অধিবেশন থেকে বরখাস্ত করেছিলেন ওম বিড়লা। তারই ধারবাহিকতায় আজ সোমবার এই ৩০ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
পার্লামেন্টের সূত্রে জানা গেছে, অমিত শাহ’র জবাবদিহিতা চেয়ে শনিবার অধিবেশন চলাকালে এই এমপিরা ব্যাপক হট্টগোলের পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনও করেছিলেন। এই ব্যাপারটিকে আমলে নিয়েই এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে রোববার এক ভাষনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, বোমা হামলার এই ঘটনায় পার্লামেন্টে ক্ষোভ প্রকাশ না করে তদন্তের দাবি তোলা উচিত বিরোধী এমপিদের।