Date: October 30, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / আন্তর্জাতিক / মিয়ানমারে বোমা হামলায় সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত ৫

মিয়ানমারে বোমা হামলায় সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত ৫

September 04, 2023 11:22:46 AM   আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারে বোমা হামলায় সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত ৫

মিয়ানমারের থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়াওয়াদির পুলিশ স্টেশন ও প্রশাসনিক দপ্তরে বোমা হামলায় সেনা-পুলিশসহ ৫ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন, এবং আহত হয়েছেন আরও ১১ জন। সোমবার সকালে পৃথক দু’টি হামলায় তারা হতাহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

নিহতদের মধ্যে একজন সেনা, দু’জন পুলিশ এবং দু’জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা রয়েছেন বলে জানা গেছে। আহত ১১ জনের সবাই পুলিশের সিনিয়র ও জুনিয়র কর্মকর্তা।  তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর।

সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, সোমবার সকালে কাছাকাছি সময়ে মায়াওয়াদির জেলা প্রশাসনিক কার্যালয় এবং পুলিশ স্টেশনকে লক্ষ্য করে দু’টি শক্তিশালী বোমা ফেলা হয়। এই দুই কার্যালয় একই কম্পাউডে পাশাপাশি অবস্থিত।

ক্ষমতাসীন জান্তা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা এবং স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের এক কর্মকর্তা এএফপিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলে বলেছেন, হামলার পর ওই এলাকায় পাহারা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে হামলায় হতাহতের নাম এবং নিজেদের নাম-পরিচয় তারা প্রকাশ করতে চাননি।

করেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে জান্তাবিরোধী দল ও রাজনৈতিক শক্তিগুলোর জোট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ) এবং মিয়ানমারের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি  (কেএনএলএ) এই হামলার জন্য দায়ী।

মায়াওয়াদি শহর থেকে অল্প খানিক দূরত্বে সীমান্ত, তার ওপারে থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশ। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে উচ্ছেদ করে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। বর্তমানে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধানও তিনি।

সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পরপরই সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনতা। শান্তিপূর্ণ সেই বিক্ষোভ দমনে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করলে স্থিমিত হয়ে আসে গণতান্ত্রিক বিক্ষোভ, সেই সঙ্গে মাথাচাড়া দিতে থাকে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গেরিলা সংগ্রাম। বিভিন্ন শহরের সেনা ছাউনি, সরকারি কার্যালয় ও কর্মকর্তারা হতে থাকেন সশস্ত্র গেরিলা যোদ্ধাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু।

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যমগুলো তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মিয়ানমারের যেসব শহরে জান্তা ও জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সংঘাত সবচেয়ে বেশি ঘটছে, মায়াওয়াদি সেসবের মধ্যে অন্যতম।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে কয়েকটি সেনাছাউনি ও পুলিশ স্টেশনে একযোগে বোমা হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন ৮ জন সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা।

দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) সেই হামলার দায় স্বীকারের পর সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেনাবাহিনীকে রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের নির্দেশ দেন।

ভয়াবহ সেই অভিযানে সেনা সদস্যদের হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সামনে টিকতে না পেরে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। সেই ঘটনার পর প্রায় ৬ বছর পেরিয়ে গেছে, এখনও তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেননি।