রাশিয়ার ইহুদিবিদ্বেষী দাঙ্গা কঠোরভাবে দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির অন্যতম শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতা ও মুসলিম অধ্যুষিত প্রদেশ চেচনিয়ার প্রেসিডেন্ট রমজান কাদিরভ। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার চেচনিয়ায় রাশিয়ার পুলিশ বাহিনীর এক অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একান্ত বিশ্বস্ত এই নেতা বলেন, ‘রাশিয়ায় আইনশৃঙ্খলাবিরোধী দাঙ্গাকারীদের কোনো স্থান নেই। এখানে থাকতে হলে অবশ্যই সবাইকে আইনশৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।’
পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি কখনও দাঙ্গা পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, সেক্ষেত্রে দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোতে কোনো প্রকার দ্বিধা করবেন না।’
‘আর যদি দেখেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, সেক্ষেত্রে প্রথমে দাঙ্গাকারীদের সতর্ক করার জন্য ৩টি ফাঁকা গুলি ছুড়বেন। যদি তাতে কাজ না হয়, তাহলে চতুর্থ গুলিটি ছুড়বেন একদম (দাঙ্গাকরীদের) কপাল সই করে।’
গত ২৯ অক্টোবর ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে বিমানের একটি ফ্লাইট নামার খবরে রাশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত দাগেস্তান প্রদেশের একটি বিমানবন্দরে ঢুকে পড়ে একদল উত্তেজিত জনতা। এ সময় অনেককে ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ছুটে যেতে দেখা গেছে, অনেকে রানওয়েতে ঢুকে বিমানটি ঘিরে ফেলার পরিকল্পনাও করেছিলেন।
এটি ছিল একটি ট্রানজিট ফ্লাইট যা দুই ঘণ্টা পর মস্কোর উদ্দেশে আবার উড্ডয়নের কথা ছিল। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে ওই দিনই ৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ ঘটনার ২ দিন পর রাশিয়ার পুলিশকে এই নির্দেশ দিলেন কাদিরভ, যিনি রাশিয়ার ভেতরে ও বাইরে ‘পুতিনের পদাতিক’ নামে পরিচিত।
মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যে সংঘাত চলছে, তাকে ১৯৫৩ সালের পর ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিশ্লেষকরা। গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলার মধ্যে দিয়ে সূত্রপাত ঘটে এই যুদ্ধের।
সেদিন ভোরে গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে কয়েকশ প্রশিক্ষিত হামাস যোদ্ধা এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শত শত বেসামরিক ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যার পাশাপাশি ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায়। এই জিম্মিদের মধ্যে ১৩৮ জনই বাইরের বিভিন্ন দেশের নাগরিক।
এদিকে হামাস হামলা চলানোর পর ওই দিন ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী, যা এখনও চলছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা বর্ষণে উপত্যকায় নিহত হয়েছেন গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৮ হাজার ৫২৫ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২১ হাজার ৫৪৩ জন।
এই যুদ্ধের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশ ইসরায়েলকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা সমর্থন দিয়ে আসছে। অন্যদিকে রাশিয়া ও চীন দাবি জানিয়ে আসছে যুদ্ধবিরতির।