নিজেদের ওয়ান্টেড তালিকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রেসিডেন্ট পিওতর হফমানস্কির নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে রাশিয়া। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ডেটাবেজে ওয়ান্টেড তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানায় দেশটি।
সোমবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রেসিডেন্ট পিওতর হফমানস্কির নাম ওয়ান্টেড তালিকায় যুক্ত করার কথা জানিয়েছে রাশিয়া। এর আগে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ করার অভিযোগে চলতি বছরের মার্চ মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
পুতিনের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, তিনি বেআইনিভাবে ইউক্রেনের শিশুদের রাশিয়াতে সরিয়ে নিয়েছেন।
রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেটাবেজে বলেছে, পোল্যান্ডের নাগরিক পিওতর হফমানস্কি রাশিয়ার ফৌজদারি আইনের আওতায় ওয়ান্টেড হিসেবে বিবেচিত হবেন। তবে পিওতরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি রুশ এই মন্ত্রণালয়।
চলতি বছরের মার্চে হেগ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক এই আদালত ইউক্রেনীয় শিশুদের বেআইনিভাবে নির্বাসনের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঘোষণা করেছিল। একই অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল রুশ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের শিশু অধিকার বিষয়ক কমিশনার মারিয়া এলভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও।
অবশ্য আইসিসির কোনও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মস্কোর এই ধরনের পদক্ষেপ এবারই প্রথম নয়। রাশিয়া এর আগে আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খান এবং বেশ কয়েকজন বিচারকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
এছাড়া প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ‘অকার্যকর’ বলেও বার বার জোর দিয়ে বলে আসছে রাশিয়া। অবশ্য রুশ বাহিনীকে জবাবদিহি করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনে একটি মাঠ কার্যালয় খুলেছে আইসিসি।
মূলত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকলেও কোনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা নেই। আইসিসি যা করতে পারে তা হলো, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিভিন্ন দেশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা এবং গ্রেপ্তারের পরে তাকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে বিচারের জন্য হাজির করা।
এছাড়া আইসিসি তার বিচারিক ক্ষমতাও শুধু সেসব দেশে প্রয়োগ করতে পারে, যে দেশগুলো এই আদালত গঠন করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তিটি রোম সংবিধি নামে পরিচিত। রাশিয়া এই সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি।
তাই পুতিন বা মারিয়া এলভোভা-বেলোভাকে আপাতত এই আদালতের হাতে সমর্পণের কোনও সুযোগ নেই।