আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় বাস্তুচ্যুত লোকজনের অনুপ্রবেশ রোধে তুরস্কের সঙ্গে থাকা স্থল ও সমুদ্র সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে গ্রিস। এসব এলাকায় গ্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শত শত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
৬ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা না পেলে বসন্তের শুরুতে ঘরহারা মানুষজন ইউরোপের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করবে।
গ্রিসের অভিবাসন মন্ত্রী নোটিস মিতারাচি বলেন, লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া চূড়ান্ত সমাধান হতে পারে না। ভূমিকম্পের পরপরই আমরা তুরস্ক ও সিরিয়ায় জরুরি সহায়তা পাঠিয়েছি, কিন্তু এ মুহূর্তে অতিরিক্ত শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই।
জানা যায়, তুরস্ক সীমান্তে গ্রিসের ৩৫ কিলোমিটার লম্বা একটি প্রাচীর রয়েছে। দেশটি এখন এ সীমান্ত প্রাচীর আরও প্রসারিত করতে চায়। গিসের অভিবাসন মন্ত্রী বলেন, অর্থায়ন সরকার দিক কিংবা ইউরোপী ইউনিয়নের (ইইউ) কাছ থেকে আসুক না কেন গ্রিস, যেকোনো উপায়ে এ প্রাচীর সম্প্রসারণ করবে।
২০ ফেব্রুয়ারি গ্রিসের নাগরিক সুরক্ষামন্ত্রী টাকিস থিওডোরিকাকোস বলেছিলেন, সীমান্ত প্রাচীর সম্প্রসারণের জন্য প্রায় ১০ কোটি ইউরো খরচ করা হবে। এ অর্থায়ন গ্রিসের বাজেট থেকেই আসার কথা।
থিওডোরিকাকোস আরও জানান, ১০ মাসের মধ্যে প্রাচীরটি সম্প্রসারণ হযে যাওয়ার কথা রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরে এথেন্স সীমান্তবর্তী এভ্রোস (তুর্কি ভাষায় মেরিক) নদীর অগভীর অংশে ৩৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় পাঁচ মিটার উঁচু ইস্পাতের প্রাচীর দিয়েছে।
এভ্রোস পেরিয়েই অভিবাসীরা তুরস্ক থেকে গ্রিসে আসেন। পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করেন। এ যাতায়াত বন্ধ করতেই গ্রিস সরকার সীমান্তে দীর্ঘ প্রাচীর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বলা হচ্ছে অভিবাসন নীতিতে গ্রিসের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিস বামপন্থী পূর্বসূরি অ্যালেক্সিস সিপ্রাসের চেয়েও বেশি কঠোর। বিষয়টি বিশ্বজুড়ে বেশ সমালোচনার জন্ম দেয়। তবে এসব সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে মিতসোতাকিস বলেন, আমাদের অভিবাসন নীতিগুলিকে কঠোর কিন্তু ন্যায্য।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা গত বছর প্রায় দুই লাখ ৫৬ হাজার অভিবাসীকে এ সীমান্ত পার হতে বাধা দিয়েছে৷ একই সময়ে, এক হাজার ৩০০ জন মানব পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, এথেন্স বেআইনিভাবে অভিবাসীদের তুরস্কে ফেরত পাঠাচ্ছে। বিপরীতে চুপ রয়েছে ইইউ।