ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে না জড়াতে ইরানকে সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে একই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহকেও।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাতে ইতোমধ্যেই দেড় হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং এর মধ্যেই হামাসের এই দুই মিত্রকে সংঘাতে না জড়াতে সতর্ক করল ওয়াশিংটন। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পৃথক দুই প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ জেনারেল ইসরায়েলের সংঘাতে না জড়াতে সোমবার ইরানকে সতর্ক করে দিয়েছেন। মার্কিন এই জেনারেলের নাম চার্লস কিউ ব্রাউন। তিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের জন্য তার বার্তা কী জানতে চাইলে জেনারেল চার্লস কিউ ব্রাউন বলেন: ‘(সংঘাতে) জড়িত হওয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বেশ শক্তিশালী একটি বার্তা পাঠাতে চাই। চলমান সংঘাতকে আমরা আরও বিস্তৃত করতে চাই না এবং ইরানের জন্য আমাদের বার্তাটি বেশ জোরালো ও স্পষ্ট।’
অন্যদিকে ইরানের মতো লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংঘাতে না নামতে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সিনিয়র একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, হিজবুল্লাহর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংঘাতের দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ নেওয়া উচিত নয় কারণ ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
মার্কিন এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘হিজবুল্লাহর এই ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং এই সংঘাতের দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার বিষয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত শনিবার থেকে ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে হামাস।
হামাসের এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে বহু সেনাসদস্য, নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ২৫০০ ইসরায়েলি। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি।
এই ঘটনায় ইসরায়েল উপকূলে বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইসরায়েলে আরও সামরিক সহায়তার কথাও জানিয়েছে দেশটি। এছাড়া সোমবার ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপের কথা ঘোষণা করেছে।
হামাসের হামলায় বিপর্যস্ত ইসরায়েলে ইতোমধ্যেই অনুপ্রবেশ করছে লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর সদস্যরা। এ সময় সীমান্তে হিজবুল্লাহর সদস্যদের সাথে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সোমবার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী লেবানন সীমান্তে সৈন্যও মোতায়েন করেছে।