Date: November 23, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / রাজনীতি / ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে : হেফাজত

৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে : হেফাজত

October 25, 2023 10:50:44 AM   স্টাফ রিপোর্টার
৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে : হেফাজত

স্টাফ রিপোর্টার:

গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য সাত দাবি ও তিন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এর মধ্যে গ্রেপ্তার নেতাদের আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি না দিলে আবার রাজপথে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

আজ বুধবার (২৫ অক্টোবর) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটির নেতারা।

জাতীয় নির্বাচনের আগে কারাবন্দি আলেমদের মুক্তির দাবি জানিয়ে হেফাজত নেতারা বলেন, নির্বাচনের আগে আলেমদের মুক্তি না দিলে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, হেফাজতে ইসলামের কারাবন্দি সব নেতাকর্মীকে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। এছাড়া হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

হেফাজত মহাসচিব বলেন, ‘প্রায় তিন বছর ধরে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি আছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, অর্থ সম্পাদক মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ আরও অনেক আলেম। সাজানো মামলায় তাদের এত দীর্ঘ সময় অন্যায়ভাবে বন্দি করে রেখেছে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘আজকের সম্মেলন কারাবন্দি সব নেতাকর্মীকে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। ২০১৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামবিরোধী সব অপশক্তি প্রতিরোধ, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং মজলুম মানবতার অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বস্তরের আলেম ও তৌহিদী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে। সরকারিভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।’

কর্মসূচি প্রসঙ্গে সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আগামী ৩ মাসের মধ্যে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের জেলা, উপজেলা ও মহানগর কমিটি গঠন করা হবে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে করা হবে শানে রেসালাত সম্মেলন। পর্যায়ক্রমে অন্য সব জেলাতেও অনুষ্ঠিত হবে।’

বেফাকের মহাসচিব ও হেফাজতের নায়েবে আমির মাহফুজুল হক বলেন, ‘হেফাজত রাজনৈতিক সংগঠন নয়, তবে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন। ইসলাম যদি রক্ষা না পায় তবে এদেশের স্বাধীনতা রক্ষা পাবে না। কেউ যদি ইসলামবিরোধী কাজ করে হেফাজত তার প্রতিরোধ করবে। হেফাজতের ১৩ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে।’

কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘কারাবন্দি আলেমদের মুক্তির জন্য যেকোনো কর্মসূচি দিয়ে কারাগারের লৌহ-কপট ভেঙে তাদের বের করে আনতে হবে।’

হেফাজতের নায়েবে আমির আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে আলেমদের মুক্তি দিতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, ‘আলেমদের জেলে রাখা হয়েছে, এটা সংবিধানের লঙ্ঘন। নির্বাচনের আগে সবাইকে মুক্তি দিতে হবে। নির্বাচনের আগেই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। যদি তা না করা হয়, জনগণ নির্বাচনে দাঁতভাঙা জবাব দেবে। এই দেশে কোনো অপশক্তি টিকে থাকতে পারবে না।’

কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আব্দুল কাদের বলেন, ‘মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আলেমদের মুক্তি চাই, না হলে এদেশে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে।’

হেফাজতের সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজী বলেন, ‘আলেমরা জেলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিন। জেলের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। জেলের ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।’

হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘প্রায় তিন বছর ধরে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে বন্দি আছেন মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি মাহমুদ গুণবি ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ আরও অনেক আলেম। তাদের এত দীর্ঘ সময় অন্যায়ভাবে সরকার বন্দি করে রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও তারা মুক্তি পাচ্ছেন না। নতুন মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হচ্ছে। কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি ও প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় রাখা হয়েছে। জুমার খুতবা ও ওয়াজ-মাহফিল নিয়ন্ত্রণে বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় ও নাগরিক স্বাধীনতাও খর্ব করা হয়েছে।’

যেসব কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে

১. আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কারাবন্দি হেফাজতের সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

২. আগামী ৩ মাসের মধ্যে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের জেলা, উপজেলা ও মহানগর কমিটি গঠন করা হবে।

৩. আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, বি.বাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে শানে রেসালাত সম্মেলন করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলাতেও অনুষ্ঠিত হবে।