স্বাস্থ্য ডেস্ক:
দেশে একদিনে আরও ২ হাজার ৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ বছর এইডিস মশাবাহিত এ রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৭৪ জনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরো ৯ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ৬ জন ঢাকার, বাকিরা বাইরের। সবমিলিয়ে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ৩৭৩ জন দাঁড়িয়েছে।
ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যে কেবল অগাস্টের প্রথম ১০ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮ হাজার ২৪২ জন, মৃত্যু হয়েছে ১২২ জনের। বাংলাদেশে এর আগে কেবল ২০১৯ সালের এর চেয়ে বেশি লক্ষাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আর মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫০ ছাড়াল এবারই প্রথম।
জুলাই মাস থেকে ঢাকার বাইরে সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। ফলে ভর্তি রোগী ও মৃত্যুর এই সংখ্যা সামনে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন-পুরনো মিলিয়ে ৯ হাজার ৬৭৫ জন রোগীর চিকিৎসা চলছিল। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৪ হাজার ৪২১ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৫ হাজার ২৫৪ জন।
এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছিল বর্ষা মৌসুমের আগেই। ভরা বর্ষায় জুলাই মাসে তা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। জুলাই মাসের ৩১ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হন ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন রোগী, মৃত্যু হয় ২০৪ জনের। এক মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই সংখ্যা এ বছরের মোট সংখ্যার অর্ধেকের বেশি।
এছাড়া জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন এবং জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়। এ বছর এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন। এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন, মৃত্যু হয় ২৮১ জনের।