পাকিস্তানে হাজার হাজার আফগান শরণার্থী এখনো বসবাস করছেন। এর আগে কয়েক হাজার আফগান শরণার্থীকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছিল ইসলামাবাদ। আবার সেই অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
মূলত আফগান শরণার্থীরা অবৈধভাবে পাকিস্তানে আছেন বলে অভিযোগ। এদের অনেকেই পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে অভিবাসনপ্রত্যাশী। সেইমতো তারা আবেদনও করেছেন।
কিন্তু অভিযোগ, এখনো পর্যন্ত তাদের অধিকাংশকেই অভিবাসন দেওয়ার কথা জানায়নি কোনো দেশ।
ফলে পাকিস্তানেই অবৈধভাবে বসবাস করছেন তারা। এবার সেই শরণার্থীদের দেশের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ।
তিনি বলেছেন, আফগানদের দেশে ফেরানোর দ্বিতীয় দফার অভিযান শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। যাদের কাছে আফগান সিটিজেন কার্ড আছে, তাদের আগে ফেরানোর ব্য়বস্থা করা হবে। বস্তুত, এর আগে কয়েক লাখ আফগানকে দেশে ফিরিয়েছিল পাকিস্তান।
আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় প্রায় ছয় লাখ আফগান দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়েছিলেন। একটি বড় অংশ সে সময় ইরানের দিকে গেছে। অন্য় অংশ সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকেছে। কয়েক লাখ আফগান সেই থেকে পাকিস্তানে অবৈধভাবে বসবাস করছে।
কয়েকমাস আগে এই আফগানদের দেশে ফেরানোর অভিযান শুরু করে পাকিস্তান। এবার দ্বিতীয় দফার অভিযান শুরু হবে বলে জানালো পাকিস্তান সরকার।
গত কয়েক বছরে ইসলামাবাদের সঙ্গে কাবুলের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পরিবেশও তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আফগান শরণার্থীদের দেশে থাকা যথেষ্ট নিরাপদ নয় বলেই মনে করছে পাকিস্তান।
বালোচ জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত ৪৪ হাজার আফগান শরণার্থীকে অভিবাসন দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। এর মধ্যে ২৫ হাজার মানুষকে অভিবাসন দেওয়ার কথা জানিয়েছে আমেরিকা, ৯ হাজার মানুষ যাবেন অস্ট্রেলিয়ায়, ছয় হাজার কানাডায়, তিন হাজার জার্মানিতে এবং এক হাজার যুক্তরাজ্যে।
উল্লেখ্য, ন্যাটো পরিচালিত আফগান সরকারের যখন পতন হচ্ছে এবং তালেবান ক্ষমতা দখল করছে, সে সময় এক লাখ ২০ হাজার মানুষকে বিমানে তুলে পাকিস্তানে নিয়ে এসেছিল যৌথ বাহিনী। এই শরণার্থীদের দ্রুত নিজেদের দেশে অভিবাসন দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো।
কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। শরণার্থীরা পাকিস্তানেই থেকে গেছেন। পাকিস্তান জানিয়েছে, যাদের অন্য দেশে যাওয়ার কথা, তাদের দ্রুত সেখানে যেতে হবে, যারা এখনো কোনো আশ্বাস পাননি, তাদের নিজের দেশে ফিরে যেতে হবে।