ইউক্রেনের হামলায় ক্রিমিয়া উপদ্বীপের ফিওদোসিয়া এলাকায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওই জাহাজের এক ক্রু নিহত ও দু’জন আহত হয়েছেন। রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ একটি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা হয়েছে বলে কিয়েভ দাবি করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মস্কোর পক্ষ থেকে হামলার বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর বরাত দিয়ে দেশটির বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স বলছে, ফিওদোসিয়ায় রুশ যুদ্ধজাহাজে হামলায় বিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইউক্রেন। হামলায় নোভোচেরকাস্ক নামের রাশিয়ার ওই জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পোল্যান্ডে তৈরি এই যুদ্ধজাহাজ সামরিক বাহিনীতে ব্যবহার শুরু হয় ১৯৮০’র দশকের শেষের দিকে। ট্যাংক, সাঁজোয়া যান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোনসহ বিভিন্ন ধরনের সামরিক অস্ত্র পরিবহন করতে পারে এই যুদ্ধজাহাজ।
রাশিয়ার কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রকাশিত নোভোচেরকাস্ক যুদ্ধজাহাজে হামলার ভিডিওতে দেখা যায়, জাহাজটিতে আকস্মিক শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটছে। এই বিস্ফোরণের পর সেটিতে আগুন ধরে যায়।
ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার নিয়োগৃকত গভর্নর সের্গেই আকসিয়োনোভ টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় বলেছেন, হামলায় একজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন। এছাড়া ফিওদোসিয়ার অন্তত ছয়জন বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দেড় বছরের বেশি সময় ধরে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সাফল্য খুব বেশি নেই। বরং রুশ সামরিক বাহিনীই ইউক্রেনে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে এবং সেখানকার একের পর এক এলাকা দখলে নিয়েছে। কিন্তু এর মাঝেই ক্রিমিয়া উপদ্বীপে কৃষ্ণ সাগরে নিয়াজিত রাশিয়ার রণতরীর বহরের প্রধান কার্যালয়ে সিরিজ হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেন। এতে রুশ সামরিক বাহিনীর গুরুতর ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী বলেছে, ফিওদোসিয়ায় স্থানীয় সময় ২৬ ডিসেম্বর রাত আড়াইটার দিকে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ নোভোচেরকাস্কে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা।
টেলিগ্রামে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর কমান্ডার মাইকোলা ওলেশচুক বলেছেন, আর এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া ধীরে ধীরে ছোট হয়ে যাচ্ছে। বিমান বাহিনীর পাইলট এবং নিখুঁত এই হামলায় জড়িত প্রত্যেককে ধন্যবাদ।
ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার নিয়োগকৃত প্রশাসনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিওদোসিয়া থেকে কোনও ট্রেনই ছেঢ়ে যাচ্ছে না। যাত্রীদের আশপাশের স্টেশন ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালে হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের দখল ছিনিয়ে নেয় রাশিয়া। এরপর সেখানে রাশিয়া নিজেদের অনুগত প্রশাসন নিয়োগ করেছে। এই উপদ্বীপের দক্ষিণ উপকূলের ফিওদোসিয়ায় প্রায় ৬৯ হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে।