পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কারাবন্দী প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান দলের মধ্যে ফাটল, গ্রুপিং ও কোন্দলের কথা স্বীকার করেছেন।
দ্বন্দ্ব নিরসনে আগামীকাল আদিয়ালা কারাগারে উভয় পক্ষের সাথে বৈঠকে বসবেন তিনি। বুধবার (৩ জুলাই) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এবং জিও নিউজ।
অবশ্য পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) দলের ভেতরে বড় কোনও মতপার্থক্য নেই বলেও জানান ইমরান। আদিয়ালা কারাগারের ভেতরে অবস্থিত আদালত কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার এসব কথা বলেন।
জিও নিউজ বলছে, দলের ভেতরে গ্রপিং ও কোন্দলের বিষয়টি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এমন সময়ে স্বীকার করে নিলেন যখন পিটিআই কার্যত প্রকাশেই অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ভুগছে এবং দলটির নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। যদিও পিটিআইয়ের কোর কমিটি এই সপ্তাহের শুরুতে দলের মধ্যে কোনও বিভাজনের অস্তিত্ব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এর আগে গত মাসে পাকিস্তানের সাবেক এই ক্ষমতাসীন দলের মহাসচিব ওমর আইয়ুব জাতীয় পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসাবে তার ভূমিকার দিকে মনোনিবেশ করার জন্য দলের মহাসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পিটিআই নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের খবরের মধ্যেই তার এই পদত্যাগের বিষয়টি সামনে এসেছিল।
এছাড়া ইমরানের প্রতিষ্ঠিত এই দলের বেশ কয়েকটি সূত্র জিও নিউজকে জানিয়েছে, ২৭ জন পিটিআই-সমর্থিত সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল (এসআইসি) আইন প্রণেতা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে জাতীয় পরিষদ থেকে পদত্যাগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ওই ২৭ জনের মধ্যে ২১ জন আইনপ্রণেতা আবার জেল থেকে পার্টি প্রতিষ্ঠাতাকে মুক্ত করতে শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতার বিষয়ে একটি ফরোয়ার্ড ব্লক গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন বলেও সূত্রগুলো জানিয়েছে।
অবশ্য শেষমেষ ওমর আইয়ুবের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত পিটিআইয়ের সংসদীয় দল প্রত্যাখ্যান করেছে। পরবর্তীতে দলটির কোর কমিটি তাকে দলের শীর্ষস্থানীয় এই পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে অনুরোধ করে।
উল্লেখ্য, পিটিআইয়ের বিশিষ্ট নেতা শের আফজাল মারওয়াতকে গত মে মাসে দলের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। মূলত ওমর আইয়ুবসহ অন্যদের সাথে কাজ করতে অস্বীকার করার পরে তাকে ওই নোটিশ দেওয়া হয়।
এছাড়া ইসলামাবাদের বিচারিক কমপ্লেক্সের বাইরে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের জন্য এই নেতাকে দায়ী করা হয় পিটিআইয়ের একটি রিপোর্টে। গত সপ্তাহে শিবলি ফারাজের পদত্যাগও দাবি করেন মারওয়াত।
সেসময় তিনি বলেন, এর মাধ্যমেই দলটি ‘কাবজা মাফিয়া’ থেকে মুক্ত হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্ট থেকে জেলে রয়েছেন ৭১ বছর বয়সী ইমরান খান। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় তার কারাদণ্ড হয়েছে। এছাড়া ইমরানের বিরুদ্ধে এখনো আরও কয়েক ডজন মামলা চলছে।
সব মামলা থেকে জামিন এবং দণ্ড স্থগিত করে এখনই ইমরান খানের জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।