গত আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর এবং সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সংঘাতে এ পর্যন্ত গোষ্ঠীটির ১২৫ জন সেনা নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ সোমবার নিহত হয়েছেন ১ জন।
লেবাননভিত্তিক বিশ্বের বৃহত্তম এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এই তথ্য। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আর কিছু বলা হয়নি বিবৃতিতে। নিহত সেনার নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে, লেবাননের সরকারি বার্তাসংস্থা এনএনএ জানিয়েছে, রোববার রাতভর ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী লেবাননের তিন দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আরমেইশ, মারওয়াহিন এবং ধায়রায় হিজবুল্লাহর বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
এই তিন শহরে ড্রোন হামলার পাশপাশি লেবাননের নাকুরা, আলমা আশ-শা’ব এবং আল-বুস্তান শহরে গোলাবর্ষণও করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন অন্তত ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।
সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজার ৫৮৬ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন।। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।
আর হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা।
এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন; এবং রয়েছেন শিশু, নারী, তরুণ-তরুণী এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধা— সব বয়সী মানুষ।
এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান শুরুর পরদিন ৮ অক্টোবর থেকে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে যুদ্ধে যোগ দেয় হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের ওপার থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো শুরু করে এই গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা।
আর্টিলারি গোলা এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার মাধ্যমে সেসব হামলার জবাব দেওয়া শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনীও। তারই ফলাফল গোষ্ঠীটির ১২৫ জন সেনার প্রাণহানি।
তবে হিজবুল্লাহর হামলায় এ পর্যন্ত কতজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন, সে তথ্য এখনও প্রকাশ করেনি আইডিএফ।