ডেস্ক রিপোর্ট:
প্রেমের বাতাস গায়ে লাগলে অনেকেই বিচারবুদ্ধি হারিয়ে ফেলেন। নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অন্যের হাতে সমর্পণ করে দেন। বিশেষ করে কম বয়সের প্রেমে এটা বেশি হয়। তবে জীবনের একটি পর্যায়ে এসে সবাই এমন একজন সহযোগী চান, যার বন্ধুতা, ভালোবাসা এবং যত্নে বাকি জীবন সহজে পার করা যায়। ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা, দীর্ঘদিন একসঙ্গে চলার পরও অনেক সম্পর্ক পরিণতি পায় না। ইতি টানতে হয় মাঝপথে। নানা কারণে একজন আরেকজনকে ছেড়ে চলে যান, প্রেমে বিচ্ছেদ ঘটে। একপক্ষ তখন নিজেকে প্রতারিত মনে করেন। তবে প্রতারণার শিকার হওয়া মানেই যে জীবন থেমে যাবে তা কিন্তু নয়। নতুন পথচলায় এবার হয়তো যাকে সঙ্গে পাবেন, তিনি আপনার জীবন রঙিন করে তুলবেন। জেনে রাখুন, প্রেমে প্রতারিত হলে কী করবেন—
১. বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যে ব্যক্তি প্রতারিত হন, সম্পর্কে যুক্ত থাকার সময়েও সে–ই বেশি ভুক্তভোগী ছিলেন। হয়তো তার পছন্দকে দমিয়ে নিজের পছন্দকে বেশি গুরুত্ব দিতেন পার্টনার। এমন কর্তৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেয়ে বরং নিজেকে আরও ভালোবাসুন। আপনি এখন নিজের পছন্দের খাবার খেতে, পোশাক পরতে বা কাজ করতে পারবেন। এতে বরং আপনার নিজের আরও খুশি হওয়া জরুরি। এই সময়ে নিজেকে বেশি করে ভালোবাসুন।
২. মনোবিদেরা বলেন, প্রেম ভেঙে যাওয়ার পরের তিন মাস একজন মানুষের মানসিক অবস্থা সবচেয়ে খারাপ থাকে। যার সঙ্গে আলাপে–আড্ডায় দিন–রাতের প্রায় বেশির ভাগ সময় কাটত, যাকে ঘিরে ভবিষ্যতের স্বপ্ন সাজাতেন, অনেকে সেই মানুষটির অনুপস্থিতি হুট করে মেনে নিতে পারেন না। কিন্তু নিজের জন্য এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের (যারা আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন) জন্য হলেও নিজেকে শক্ত রাখতে হবে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জোবায়ের মিয়া বলেন, ‘ভুক্তভোগীর মানসিক এই বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যেতে হবে। যেমন নিজে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকা, প্রতি বেলায় ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, নিজের কষ্টের কথা খোলামেলা আলোচনা করা, ভালো বন্ধুদের সঙ্গে নিজের মনের কথা বলার মতো কাজগুলো চালিয়ে যেতে হবে। এই সময়ে পরিবারের সদস্যদেরও উচিত তাকে মানসিকভাবে সাহায্য করা, চোখে চোখে রাখা; যাতে সে ভুল কোনো চিন্তা মাথায় না আনে।’
৩. প্রাক্তনের কোনো স্মৃতি চোখের সামনে রাখবেন না। প্রেমের সময় প্রাক্তনের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন উপহার যা দেখে আপনি কষ্ট পেতে পারেন, সেসব অন্য কাউকে দিয়ে দিতে পারেন। সাবেকের পছন্দের জিনিস, জায়গা, খাবার, সুগন্ধী—এসবের মধ্যে নিজেকে আটকে না রেখে স্বাভাবিক হতে হবে। পরিস্থিতির জন্য নিজেকে দোষারোপ না করে নিজেকেই সাহস দিন, নিজে পথচলার নতুন অধ্যায় শুরু করুন।