কানাডার আবাসন সংকট সমাধানে সময় লাগতে পারে কয়েক বছর। এমনকি আবাসন নির্মাণকাজ যদি গত ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চতায় পৌঁছায়, তারপরও এই সময় লাগবে। কানাডার অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড একথা জানিয়েছেন।
এমনকি চলমান আবাসন সংকট কানাডিয়ান সরকারের জনপ্রিয়তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন সংকট যা কানাডিয়ান সরকারের জনপ্রিয়তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তা সমাধান করতে কয়েক বছর সময় লাগবে বলে দেশটির অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড শনিবার বলেছেন। এমনকি নির্মাণকাজ যদি ৮০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছায় তারপরও এই সময় লাগবে।
রয়টার্স বলছে, আবাসন সংকট নিয়ে যে চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে, সেটি এই মন্তব্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল প্রশাসনের একজন সিনিয়র সদস্য স্বীকার করে নিয়েছেন। জনমত জরিপে কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল গোষ্ঠী তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভদের চেয়ে পেছনে রয়েছে।
মূলত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং বাড়ির দাম বৃদ্ধির জন্য অটোয়া তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করে আসছেন কনজারভেটিভরা।
রয়টার্স বলছে, কানাডায় আবাসনের বিষয়টি প্রধানত দেশটির ১০টি প্রদেশের পাশাপাশি প্রধান প্রধান পৌরসভাগুলোর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। অন্যদিকে এই বিষয়ে অটোয়ার ভূমিকা নীতি পরামর্শমূলক এবং আর্থিক প্রণোদনার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
স্থানীয় সময় শনিবার ফ্রিল্যান্ড বলেন, ‘এই কাজে আমাদের সবাইকে লাগবে — ফেডারেল সরকার এবং প্রদেশ, শহর ও নগর, বেসরকারি খাত এবং অলাভজনক সংস্থাসহ সবাইকে অভিন্ন কারণে একসাথে কাজ করতে হবে, আর সেটিও কয়েক সপ্তাহ বা মাস নয়, বছরের পর বছর কাজ করতে হবে।’
মন্ট্রিয়ালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কানাডায় ক্রমবর্ধমান ভাবে প্রয়োজনীয় বাড়িগুলো নির্মাণের জন্য আরেকটি বড় ধরনের জাতীয় প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে।’
তার মতে, সংকট মেটাতে কানাডাকে এমন গতি এবং স্কেলে বাড়ি তৈরি করতে হবে যা ১৯৪০ এবং ১৯৫০ এর দশকের পর থেকে আর দেখা যায়নি।
রয়টার্স বলছে, বাড়ির সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, নতুন ভাড়ার অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং নির্মাণের ওপর ফেডারেল সরকারের নির্ধারিত ৫ শতাংশ কর সরিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া আবাসন সমস্যার সমাধান করার জন্য দেশের শহরগুলোকেও আরও কিছু করতে বলছে দেশটির সরকার।
উল্লেখ্য, বর্তমানে কানাডাজুড়ে তীব্র আবাসন সংকট দেখা দিয়েছে। ছোট-বড় সব শহরেই এ সমস্যা। এর ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বাড়ি ভাড়া করতে না পেরে হাজার হাজার ডলার খরচ করে হোটেলে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। আর এই কারণে কেউ কেউ এখন অর্থাভাবে ভুগছেন।
প্রসঙ্গত, কানাডায় দিন দিন আবাসন সংকট তীব্র হয়ে উঠার জন্য প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে স্রোতের মতো আসতে থাকা শিক্ষার্থী ও অভিবাসীদের দায়ী করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
তারা বলছেন, প্রতি বছর কানাডায় আসা লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও অভিবাসীদের কারণে আবাসনের চাহিদা হু হু করে বাড়ছে দেশটিতে, কিন্তু সেই অনুপাতে নতুন বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে না।