Date: November 22, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / আন্তর্জাতিক / ‘কাশ্মিরকে উপেক্ষা করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না’

‘কাশ্মিরকে উপেক্ষা করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না’

September 04, 2023 08:17:52 AM   আন্তর্জাতিক ডেস্ক
‘কাশ্মিরকে উপেক্ষা করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না’

কাশ্মিরকে উপেক্ষা করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না পাকিস্তান। দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকার এই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কাশ্মির সমস্যার সমাধান না হলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না।

জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন বলে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিও নিউজের জিরগা প্রোগ্রামে কথা বলার সময় পাকিস্তানে এই অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের রেজুলেশন অনুযায়ী কাশ্মির সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়াকে শান্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হলে তা কেবল পাকিস্তান বা ভারত নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই উদ্বেগের বিষয়।

পাকিস্তানের এই অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চায় না পাকিস্তান। তার মতে, ‘কাশ্মিরকে প্রধান একটি ইস্যু বলার অর্থ এই নয় যে, আমরা ভারতের সাথে সর্বদা যুদ্ধ চাই’। এছাড়া ইসলামাবাদের প্রতি নয়াদিল্লির ঐতিহ্যগত এবং ঐতিহাসিক সম্পর্কও বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী কাকার।

২০১৯ সালের আগস্টে জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে এটিকে ভারতীয় ইউনিয়নে একীভূত করে নয়াদিল্লি। মূলত পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিতর্কিত এই অঞ্চলকে নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিরোধটি এখনো ঝুলে আছে।

এরপরই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা দেখা দেয় এবং পাকিস্তানি ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলোকে গুলি করে ভূপাতিত করার পাশাপাশি ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে বন্দি করে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী।

২০১৯ সালের সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে আনে এবং ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লিতে একে অপরের দূতদের বহিষ্কারের পর উভয় দেশের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স তাদের নিজ নিজ মিশনের দায়িত্ব পালন করে আসছে। এছাড়া দূতাবাসে কূটনৈতিক কর্মীর সংখ্যাও কমিয়ে দেয় দুই দেশ।

মূলত দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুটি দেশ পাকিস্তান ও ভারত বিতর্কিত কাশ্মিরের পুরোটাই দাবি করলেও উভয়েই এর কিছু অংশ শাসন করে থাকে। তারা এই হিমালয় অঞ্চল নিয়ে তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দু’টিতে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।

কাশ্মিরকে কেন্দ্র করে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে। এখন উভয়েই পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে তবে ইতিহাস বলছে, ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তান আর ভারত স্বাধীনতা পাবার আগে থেকেই কাশ্মির নিয়ে বিতর্কের সূচনা হয়েছিল।

১৯৪৭ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানের পাশতুন উপজাতীয় বাহিনীগুলোর আক্রমণের মুখে কাশ্মিরের তৎকালীন হিন্দু মহারাজা হরি সিং ভারতে যোগ দেওয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, এবং ভারতের সামরিক সহায়তা পান। পরিণামে ১৯৪৭ সালেই শুরু হয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ।

উভয় দেশের এই যুদ্ধ চলেছিল প্রায় দু’বছর ধরে। এরপর কাশ্মিরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় ১৯৪৮ সালে, তবে পাকিস্তান সেনা প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করে। তখন থেকেই কাশ্মির কার্যত পাকিস্তান ও ভারত নিয়ন্ত্রিত দুই অংশে ভাগ হয়ে যায়।

অন্যদিকে ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে চীন কাশ্মিরের আকসাই-চিন অংশটির নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। আর তার পরের বছর পাকিস্তান - কাশ্মিরের ট্রান্স-কারাকোরাম অঞ্চলটি চীনের হাতে ছেড়ে দেয়।

সেই থেকে কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তান, ভারত ও চীন - এই তিন দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে আছে।