
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আর রাশিয়ার গান শোনা যাবে না। রাস্তায় কেউ রাশিয়ার গানের সুর বাজাতে পারবেন না। রাশিয়ার বইও নিষিদ্ধ। রাশিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতির ছোঁয়া আপাতত কিয়েভে আর পাওয়া যাবে না। কিয়েভের সিটি কাউন্সিল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইউক্রেনের এমপিরা বলেছেন, রুশ ভাষা হলো আক্রমণকারীদের ভাষা। তাই কিয়েভে এই ভাষার কোনো স্থান নেই। তারা আগ্রাসনকারীদের সংস্কৃতি থেকে নিজেদের বাঁচাতে চান। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করার পর ইউক্রেনে এই দাবি উঠেছিল। তখন অবশ্য এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জানানো হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক, স্থায়ী নয়।
ইউক্রেন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা অসাংবিধানিক ও বিভেদ তৈরি করে। এটা কিয়েভের সিটি কাউন্সিলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। একমাত্র ইউক্রেনের পার্লামেন্টই এই ব্যাপারে আইন করতে পারে।’
ইউক্রেনের শিল্পী বেলোরাসেট বলেছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।
এদিকে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই ইউক্রেনকে সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইইউ। চার বছরে দেশটিকে দুই হাজার দুইশ কোটি মার্কিন ডলার দেবে এই ব্লক।
ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত প্রধান জোসেপ রোরেল এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারপর বোরেল জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে এবার দীর্ঘমেয়াদী সাহায্য করা হবে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তারা যাতে প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে সেজন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বোরেল বলেছেন, ‘আমরা প্রতি বছর ইউক্রেনকে পাঁচশ কোটি ডলার দেবো। আগামী চার বছর ধরে এই সাহায্য দেওয়া হবে। এর ফলে প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে যাবে ইউক্রেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে কত খরচ হতে পারে, তা হিসাব করেই এই অর্থসাহায্য করা হচ্ছে।’
ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি জি-৭ এবং ন্যাটোর বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। ন্যাটোর বৈঠকে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যাতে ভবিষ্যতে এই জোটে ঢুকতে পারে তা দেখা হবে। তবে এখনই ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা হচ্ছে না। শুধু বলা হয়েছে, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ হলো ন্যাটো। এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তার হতাশার কথা জানিয়েছেন।
তখনই ইউক্রেনকে আরও সামরিক ও অর্থসাহায্য দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। আর বৃহস্পতিবার সেই কাজটাই করলেন ইইউয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এবার ৩১ অগাস্ট ইইউয়ের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিলে বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত বিতর্ক হবে।
তবে হাঙ্গেরির মতো কিছু দেশ এতে আপত্তি জানাতে পারে।