ইসরায়েলের তেল আবিবে পৌঁছানোর কয়েক মিনিট পর বুধবার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সাথে নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি হামাসের সাথে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি নিজের সমর্থন আরেকবার প্রকাশ করেন।
বাইডেন বলেন, গাজার আল-আহলি হাসপাতালের বিস্ফোরণটি ইসরায়েল নয়, গাজার অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠী করেছে বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, গতকাল গাজার হাসপাতালে বিস্ফোরণের ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত এবং ক্ষুব্ধ। আমি যা দেখেছি তার ওপর ভিত্তি করে এই হামলা অন্য দল করেছে বলে আমার মনে হচ্ছে, ইসরায়েল নয়।
নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য শুরু করেন জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘আমি একেবারে সাধারণ একটি কারণে আজ এখানে উপস্থিত হতে চেয়েছিলাম। আমি চাই ইসরায়েলের জনগণ এবং বিশ্বের মানুষ জানুক যুক্তরাষ্ট্র কার পাশে দাঁড়িয়েছে... আমি ব্যক্তিগতভাবে এখানে এসে বিষয়টি পরিষ্কার করতে চেয়েছিলাম।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাস ৩১ আমেরিকানসহ ১ হাজার ৩০০ মানুষকে হত্যা করেছে। এটা কোনো অতিশয়োক্তি নয়, কেবল হত্যা। তারা শিশুসহ অসংখ্য মানুষকে জিম্মি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা এমন খারাপ ও নৃশংস কাজ করেছে যা আইএসের সাথে কিছুটা মিলে যায়।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বাইডেন বলেন, ‘আমেরিকানরা আপনাদের সাথে শোক পালন করছে, তারা সত্যিই শোকাহত। আমেরিকানরা চিন্তিত... কারণ তারা জানে, আপনাকে যা করতে হবে সেটা সহজ হবে না।’
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের সব জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না হামাস। তারা ফিলিস্তিনিদের জন্য কেবল ভোগান্তি এনেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্ব তাকিয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মতো ইসরায়েলের একটি মানদণ্ড রয়েছে। আমরা কী করতে যাচ্ছি তা তারা দেখতে চাইছে।’
এ সময় নেতানিয়াহুকে বাইডেন বলেন, ইসরায়েলে আপনার পাশে আসতে পেরে আমি খুশি।
হামাসের সাথে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন ও সংহতি জানাতে বুধবার সকালের দিকে তেল আবিবে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিশাল নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাঝে বিমান থেকে নেমে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগকে আলিঙ্গন করেন তিনি। বাইডেন ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগে বুধবার রাতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আল-আহলি হাসপাতালে ভয়াবহ বোমা হামলায় ৫০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ছোড়া রকেট হাসপাতালে আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছে হামাস। আর নেতানিয়াহুর সরকার বলেছে, এই হামলার সাথে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ফিলিস্তিনের আরেক সশস্ত্রগোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদকে হাসপাতালে হামলার জন্য দায়ী করে বলেছে, ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইসলামিক জিহাদের ছোড়া রকেট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে ওই হাসপাতালে আঘাত করেছে।