শীতকালীন সবজি টমেটো বিক্রি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন এক কৃষক। মূলত: টমেটোর দামের হঠাৎ ঊর্ধ্বগতির সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন তিনি।
আকাশছোঁয়া দামে টমেটো বেচে মাত্র এক মাসেই নিজের নাম কোটিপতির তালিকায় লিখেছেন ওই কৃষক।
সৌভাগ্যবান ওই কৃষকের বাড়ি ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুনেতে। তার নাম ঈশ্বর গায়কর (৩৬)।
ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে খালিজ টাইমস জানিয়েছে, সম্প্রতি ভারতে টমেটোর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণে বেড়ে যায়। আর এ সুযোগই নেন ঈশ্বর গায়কর। গত ১১ জুন থেকে ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে টমেটো বিক্রি করে তিনি পকেটে পুরেছেন প্রায় ৩ কোটি রুপি।
খামারে অবশিষ্ট থাকা বাকি টমেটোগুলো আরও ৫০ লাখ রুপিতে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা তার।
পিটিআইকে ঈশ্বর গায়কর বলেন, এবার ১২ একর জমিতে টমেটোর চাষ করেছি। অথচ দাম কম থাকায় মে মাসে প্রচুর পরিমাণ টমেটো নষ্ট করে ফেলতে হয়। কিন্তু এরপরও টমেটো আবাদের পরিমাণ বাড়াই। এরপর হঠাৎ করে টমেটোর দাম বেড়ে যায়। ১১ জুন থেকে ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ১৮ হাজার ক্রেট (প্রতি ক্রেটে ২০ কেজি) টমেটো বিক্রি করি। খামারে আরও চার হাজার ক্রেট টমেটো রয়েছে।
সর্বোচ্চ প্রতি কেজি টমেটোর দাম ১১০ রুপি পেয়েছেন বলে জানান গায়কর। অথচ গত মে মাসে প্রতি কেজি টমেটো মাত্র আড়াই রুপিতে বিক্রি করতে হয়েছে তাকে।
তিনি জানান, সব টমেটো স্থানীয় নারায়ণগাঁ বাজারে বিক্রি করেছি। খামারে আরও চার হাজার ক্রেট টমেটো রয়েছে। এগুলো বেচলে আরও ৫০ লাখ রুপি আয় হবে।
তার এই কপাল খোলার জন্য ঈশ্বর গায়কর নিজের স্ত্রী ও বাবা-মাকে ধন্যবাদ দিলেন। জানালেন, তারা তাকে টমেটো চাষে উৎসাহিত করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই হয়।
গায়কর জানান, ২০২১ সালেই এই টমেটো চাষ করে প্রায় ১৮-২০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছিল। এবারও হচ্ছিল। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি।
বলেন, ‘এত লোকসানের পরও আমি থেমে থাকিনি। উল্টো খামারে উৎপাদন বাড়িয়েছি। ’
শুধু গায়করই নয়, টমেটোর দামের এমন ঊর্ধ্বগতিতে লাভবান হয়েছেন তার মতো আরও অনেক কৃষক।
এদের মধ্যে আরেকজন রাজু মহালে। তিনি ২০ লাখের বেশি রুপি আয় করেছেন এবার।
এ বিষয়ে নারায়ণগাঁ বাজারের টমেটো ব্যবসায়ী আকাশ রায় বলেন, ১৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কিন্তু টমেটোর এমন আকাশচুম্বী দাম এর আগে কখনো দেখিনি।