তিন দিন আগের মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনায় গ্রিসে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে পৌঁছেছে ৫৭ জনে। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রয়েছেন।
এদিকে, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার জন্য সরকারের অবহেলাকে দায়ী করে গ্রিসজুড়ে ধর্মঘট-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানী এথেন্স ও থেসালোনিকি লারিসা শহরের মাঝামাঝি একটি মালবাহী কার্গো ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় উচ্চগতিসম্পন্ন একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের। এতে যাত্রীবাহী সেই ট্রেনটির কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন ধরে যায় এবং ঘটনাস্থলেই নিহত হন অনেকে। সেই সঙ্গে এখনও নিখোঁজ আছেন বেশ কয়েকজন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরার জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটিতে ৩৫০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিলেন।
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন গ্রিসের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। দপ্তরের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমাদের তৎপরতা শেষ করার কথা ছিল; কিন্তু এখনও যারা নিখোঁজ আছেন— তাদের (সন্ধানের) জন্য শুক্রবার পর্যন্ত আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এদিকে, ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার জেরে রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে গ্রিসজুড়ে। মঙ্গলবারই ইউরোপের ভূমধ্যসগারীয় অঞ্চলের এই দেশটির অনেক শহরে লোকজন সড়েকে নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন।
ইতোমধ্যে দুর্ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন গ্রিসের পরবিহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পরই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে কারামানলিস বলেন, রেলওয়ে ব্যবস্থাকে ঠিক করতে কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের ব্যর্থতার দায় নিচ্ছেন তিনি।
যে এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানকার রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মামলাও করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিসও স্বীকার করেছেন, এই দুর্ঘটনার জন্য মানবসৃষ্ট ভুল দায়ী।
কিন্তু তারপরও থামছে না বিক্ষোভ। জনগণের এই বিক্ষোভকে সমর্থন করে বৃহস্পতিবার এক দিনের ধর্মঘট পালন করেছে গ্রিসের রেলকর্মীদের ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থা রেলওয়ার্কার্স ইউনিয়ন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা পরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগকে স্বাগত জানাই, কিন্তু নতুন যে পরিবহনমন্ত্রী আসবেন—তাকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, তার আমলে মানবসৃষ্ট ভুলের কারণে এমন দুঃখজনক ঘটনা ঘটবে না।’