গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানে আরও দুই সেনা কর্মকর্তা এবং এক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এই নিয়ে গত প্রায় দুই মাসে গাজায় নিহত ইসরায়েলি সেনাদের সংখ্যা পৌঁছালো ১৬৭ জনে।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজার মধ্যাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান চালানোর সময় নিহত হয়েছেন তারা। সর্বশেষ নিহতদের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করেছে আইডিএফ।
এরা হলেন মেজর দিভির ডেভিড ফিমা (৩২), ক্যাপ্টেন নেরিয়া জিস্ক (২৪) এবং সার্জেন্ট (ফার্স্ট ক্লাস) আসাফ পিনহাস তুবুল (২২)।
এই তিনজনের মধ্যে সার্জেন্ট আসাফ পিনহাস তুবুল নিহত হয়েছেন দক্ষিণ গাজায়; আর মেজর দিভির ডেভিড ফিমা এবং ক্যাপ্টেন নোরিয়া জিস্ক নিহত হয়েছেন গাজার মধ্যাঞ্চলে পৃথক দু’টি অভিযানে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ২১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।
সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫৪ হাজার ৯৬৮ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন।। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।
অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা।
এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন; এবং রয়েছেন শিশু, নারী, তরুণ-তরুণী এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধা— সব বয়সী মানুষ।
টানা দেড় মাস ভয়াবহ যুদ্ধ শেষে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতিস্বীকার করে গত ২৫ নভেম্বর অস্থায়ী বিরতি ঘোষণা করে হামাস-ইসরায়েলি বাহিনী। পরে ১ ডিসেম্বর দু’পক্ষের পারস্পরিক হামলার শুরুর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সেই বিরতি।
৭ দিনের অস্থায়ী বিরতির সময় নিজের কব্জায় আটক জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১১৮ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; বিপরীতে এই সময়সীমায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ১৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এখনও হামাসের কব্জায় রয়েছেন অন্তত ১২৯ জন জিম্মি। কীভাবে তাদের মুক্ত করা হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।