Date: November 23, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / আন্তর্জাতিক / পুতিনের সঙ্গে ‘অস্ত্র আলোচনার জন্য রাশিয়া যাচ্ছেন’ কিম

পুতিনের সঙ্গে ‘অস্ত্র আলোচনার জন্য রাশিয়া যাচ্ছেন’ কিম

September 05, 2023 08:33:03 AM   আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পুতিনের সঙ্গে ‘অস্ত্র আলোচনার জন্য রাশিয়া যাচ্ছেন’ কিম

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে রাশিয়া সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। চলতি মাসেই এই সফর হতে পারে এবং পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়ায় অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন কিম।

মার্কিন এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। যদিও রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের মতো যেকোনও পরিকল্পনার বিরুদ্ধে পিয়ংইয়ংকে আগেই সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন চলতি মাসে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে রাশিয়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএসকে জানিয়েছেন।

এই দুই নেতা ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনে উত্তর কোরিয়ার সহায়তার অংশ হিসেবে মস্কোকে অস্ত্র সরবরাহ করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে ওই কর্মকর্তা বলেছেন। যদিও পরিকল্পিত এই বৈঠকের সঠিক অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।

অন্যান্য মার্কিন মিডিয়াতে এই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এবং সম্ভাব্য এই সফরের বিষয়ে উত্তর কোরিয়া বা রাশিয়া থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। বেশ কয়েকটি সূত্র প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছে, কিম জং উন সম্ভবত সাঁজোয়া ট্রেনে করে রাশিয়া সফরে যাবেন।

এর আগে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে অস্ত্র সমঝোতা ‘সক্রিয়ভাবে অগ্রসর’ হওয়ার বিষয়ে নতুন তথ্য রয়েছে। আর সেই মন্তব্যের কয়েকদিন পরই পুতিন ও কিমের সম্ভাব্য এই বৈঠকটির খবর সামনে এলো।

মূলত রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য অস্ত্র চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন বলে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন। সেসময় তিনি বলেন, ‘আমরা উত্তর কোরিয়াকে রাশিয়ার সাথে অস্ত্র আলোচনা বন্ধ করার এবং পিয়ংইয়ং ইতোপূর্বে রাশিয়ার কাছে অস্ত্র সরবরাহ বা বিক্রি না করার জন্য যে প্রকাশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছি।’

কিরবি আরও বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু উত্তর কোরিয়া সফর করার সময় কিম জং উনের সাথে দেখা করে পিয়ংইয়ংকে মস্কোর কাছে আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রি করতে রাজি করার চেষ্টা করেছিলেন। অবশ্য মার্কিন কর্মকর্তারা কীভাবে এই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছেন তা বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেছিলেন হোয়াইট হাউসের এই মুখপাত্র।

টানা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে অস্ত্রসহ সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।

অপরদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে সহায়তা না করতে চীনসহ প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে সতর্ক করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতার সম্ভাব্য রাশিয়া সফর নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তার বক্তব্য এমন সময়ে সামনে এলো যখন কয়েক সপ্তাহ আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং উন তাদের দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চিঠি বিনিময় করেছেন।

পুতিন সেই সময় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে, আমরা দুই দেশের জনগণের কল্যাণ ও কোরীয় উপদ্বীপ এবং সমগ্র উত্তর-পূর্ব এশিয়ার দৃঢ় স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য সকল ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করব।’

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কিম জং উন এবং ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আসন্ন বৈঠকটি রাশিয়ার পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ভ্লাদিভোস্তক শহরে অনুষ্ঠিত হতে পারে। মার্কিন এই সংবাদপত্রের কূটনৈতিক সংবাদদাতা এডওয়ার্ড ওং বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের একটি দল গত মাসের শেষের দিকে ভ্লাদিভোস্তক ও মস্কো সফর করেছে।

তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের ওই দলটির মধ্যে ‘নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও ছিলেন যারা কিমের সফরের সময় প্রোটোকলের দায়িত্বে’ থাকেন। আর এই কারণে ভ্লাদিভোস্তক শহরে তাদের আগাম ভ্রমণকে সেখানে সম্ভাব্য এই বৈঠক অনুষ্ঠানের বিষয়ে জোরালো লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া তার স্যাটেলাইট এবং পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন কর্মসূচিতে সহায়তার জন্য মস্কোর কাছ থেকে ‘উন্নত প্রযুক্তি’ চাইছে। এছাড়াও উত্তর কোরিয়া বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে একটি। এই দেশটি প্রায়শই ব্যাপক ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে যায় এবং এই কারণে দেশটি রাশিয়ার কাছ থেকেও খাদ্য সহায়তা চাইছে।

অবশ্য উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া উভয়ই এর আগে অস্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এছাড়া উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি জোর দিয়ে বলেছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর ‘আধিপত্যবাদী নীতি’ মস্কোকে তার নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষার জন্য সামরিক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।