গণতন্ত্র নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে লেকচার দেওয়া বন্ধ করতে বলেছেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনির জান্তা শাসক কর্নেল মামাদি ডুমবুইয়া। তার দাবি, পশ্চিমা গণতন্ত্রের মডেল আফ্রিকার দেশগুলোতে কাজ করে না।
এমনকি নিজের দেশে সামরিক হস্তক্ষেপের পক্ষেও কথা বলেছেন তিনি। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে অংশ নিয়ে ভাষণ দেন গিনির জান্তা নেতা কর্নেল মামাদি ডুমবুইয়া। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া নির্দিষ্ট একটি শাসনের মডেলের কারণে’ আফ্রিকা মহাদেশ ভুগছে এবং এতে করে ‘আমাদের বাস্তবতার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘এই কারণে আমাদের উদ্দেশে লেকচার দেওয়া বন্ধ করার এবং আমাদের সাথে শিশুর মতো অবজ্ঞাসুলভ আচরণ করা বন্ধ করার সময় এসেছে।’
বিবিসি বলছে, কর্নেল ডুমবুইয়া ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আলফা কনডেকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং নিজে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তিনি বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের অধিবেশনে এই পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষেও কথা বলেন।
তার দাবি, ‘আমাদের দেশকে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা থেকে বাঁচানোর জন্য’ সামরিক অভ্যুত্থান করা হয়েছিল।
অবশ্য সেই সময়ে সামরিক অভ্যুত্থানের খবরে গিনির রাজধানী কোনাক্রিতে উত্তেজিত জনতা সেনাবাহিনীকে স্বাগত জানিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল। কারণ প্রেসিডেন্ট কনডেকে ক্ষমতাচ্যুত করায় অনেকে স্বস্তি পেয়েছিলেন।
কিন্তু আঞ্চলিক নেতারা গিনিকে বেসামরিক শাসনে ফিরে আসার আহ্বান জানায় এবং সামরিক বাহিনীর দখলের পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্চলিক জোট ইকোওয়াসে দেশটির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।
অবশ্য গত বছর কর্নেল ডুমবুইয়া ইকোওয়াসের সাথে আলোচনার পর নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি সময়সূচী ঘোষণা করেন। কিন্তু তারপরও পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে কোনও ধরনের ভোট আয়োজনে অগ্রগতি খুব সামান্যই হয়েছে বলে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
বিবিসি বলছে, গিনিসহ মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার এবং গ্যাবনের মতো পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেনা অভ্যুত্থান প্রত্যক্ষ করেছে।
অবশ্য এসব দেশে অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা করেছে ইকোওয়াস, আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ।