যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে বের করে দেওয়ার নীতি বাস্তবায়ন করছে বলে মন্তব্য করেছে জর্ডান। রোববার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, ইসরায়েলি এই যুদ্ধ ‘গণহত্যার আইনি সংজ্ঞার’ শর্ত পূরণ করে।
জর্ডানের এই মন্ত্রী বলেন, ইসরায়েল চলমান যুদ্ধের মাধ্যমে ঘৃণা তৈরি করেছে; যা এই অঞ্চলকে তাড়িয়ে বেড়াবে। আগামী কয়েক প্রজন্ম এই যুদ্ধের ক্ষত বয়ে বেড়াবে।
দোহায় এক সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা গাজায় যা দেখছি, সেটা সাধারণভাবে কেবল নিরীহ মানুষদের হত্যা এবং তাদের জীবিকা ধ্বংস নয়, বরং গাজাকে জনশূন্য করার পদ্ধতিগত এক প্রচেষ্টা।
আয়মান সাফাদি বলেন, ‘‘আমাদের যে জায়গায় আসা উচিত আমরা এখনও বিশ্বকে সেখানে আসতে দেখিনি... শর্তহীনভাবে এই যুদ্ধের অবসানের দাবি। গণহত্যার সব শর্ত পূরণ করে চলা এই যুদ্ধ এখনই বন্ধ করা উচিত।’’
তিনি বলেন, হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে হত্যা এবং নির্বিচারে বোমা হামলার পরিমাণ হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে ইসরায়েলের ঘোষিত লক্ষের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সাফাদি আরও বলেন, গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে আরব দেশগুলোর মন্ত্রীদের এক বৈঠকে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে বড় ধরনের মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সামরিক সহায়তা ও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে ওয়াশিংটনের অস্বীকৃতি ঘিরে এই বিরোধ তৈরি হয়েছে।
এদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতা ও মানবাধিকার সংগঠনের গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। হামাসকে নির্মুল করার লক্ষ্যে গাজায় এই যুদ্ধ চলছে বলে দাবি করেছেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ অবসানের দাবিকে হামাসের প্রতি সহায়তার শামিল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলার পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ২০০ জনের বেশি।