আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহতম ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের বিভিন্ন এলাকায় লুটপাট ও জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় ২টি প্রদেশ থেকে ৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।
শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।
আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার লুটপাটের অভিযোগে দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতাই প্রদেশ থেকে ৪২ জনকে এবং সাধারণ জনগণের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে পার্শ্ববর্তী কাহারমানমারাশ প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহর থেকে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তুরস্কের পুলিশ।
৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে অনেকগুলো আফটারশক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাশ প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উদ্ধার করা মরদেহের সংখ্যা ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তার মধ্যে তুরস্ক থেকে উদ্ধার হয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি মরদেহ। দেশটিতে আহতও হয়েছেন প্রায় ১ লাখ মানুষ।
তবে ভূমিকম্পের পর থেকেই তুরস্কের উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকহারে শুরু হয়েছে লুটাপাট। এই ব্যাপারটি বন্ধে ইতোমধ্যে তদন্তও শুরু করেছে দেশটির আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়। তুরস্কের বিভিন্ন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটররা এই তদন্তের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ইতোমধ্যে তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন তুরস্কে। এই অবস্থা চলাকালে তদন্ত কর্মকর্তারা অভিযুক্তদের একটানা সর্বোচ্চ ৭ দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে রাখতে পারবেন। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এ ধরনের অপরাধীদের একটানা সর্বোচ্চ ৪ দিন হেফাজতে রাখার বিধান আছে দেশটির আইনে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানও জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন লুটপাটকারীদের কঠোরভাবে দমনের পক্ষে।
শনিবার তুরস্কের দিয়ারবাকির প্রদেশের ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এরদোয়ান। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছি; তার অর্থ— দুর্যোগ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যারা লুটপাট , অপহরণ বা অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।