চারদিকে বোমা হামলা, মিনিটে মিনিটে, ঘণ্টায় ঘণ্টায় পড়ছে বোমা। এসব বোমার আঘাতে আহত হচ্ছেন শত শত মানুষ। আর আহত মানুষদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ সবাইকে। বর্তমানে বেশিরভাগ হাসপাতালেই নেই অতি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামও। ফলে যখন আহত কাউকে হাসপাতালে আনা হচ্ছে; তাদের ওপর ব্যাথানাশক ছাড়াই ছোট সেলাই থেকে শুরু করে বড় অস্ত্রোপচার সবই করতে হচ্ছে চিকিৎসক-নার্সদের।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালের এমন একটি ভয়াবহ ঘটনার চিত্র তুলে ধরেছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বুধবার (৮ নভেম্বর) হাসপাতালে আনা হয় ছোট্ট এক শিশুকে। গোলাপি রঙের জামা পড়া শিশুটি বোমার আঘাতে আহত হয়ে এমনিতেই কাতরাচ্ছিল। হাসপাতালে আনার পর যখন তাকে চেপে ধরে— ব্যাথানাশক ছাড়াই মাথায় সেলাই করা শুরু করেন নার্স— তখন ‘মা মা’ বলে জোরে জোরে চিৎকার করা শুরু করে সে।
ওই শিশুটির মাথা সেলাই করেন আবু ইমাদ হাসনাইন নামের এক নার্স। তিনি জানিয়েছেন, ওইদিনের ওই ঘটনাটি তার জন্য সবচেয়ে কষ্টের। যদিও প্রতিদিনই শত শত আহত মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে তাকে।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা মাঝে মাঝে রোগীদের ব্যান্ডেজ দেই (কামড়ে ধরার জন্য) যেন ব্যথা কম লাগে। আমরা জানি তারা যে কষ্ট সহ্য করে সেটি অনেকের ধারণার বাইরে। বিশেষ করে তাদের মতো (শিশু) বয়সীদের জন্য।’
আবু তাহির নামের এক ব্যক্তি ওইদিন আল-শিফা হাসপাতালে আসেন ড্রেসিং করানোর জন্য। তিনি কয়েকদিন আগে বিমান হামলায় আহত হন। আবু তাহির রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তার ক্ষতও কোনো ব্যথানাশক ছাড়া সেলাই করা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, ‘যতক্ষণ সেলাই করা হয়েছিল আমি পুরোটা সময় কোরআন তেলাওয়াত করেছি।’