রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আবারও ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৪ জুলাই) ভোরে হওয়া এই হামলায় মস্কোর অন্তত দু’টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এই হামলার জন্য ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছে রাশিয়া।
অবশ্য হামলায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার ভোরে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ড্রোন হামলায় অন্তত দু’টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই হামলার পেছনে ইউক্রেনকে দায়ী করেছে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, দু’টি ইউক্রেনীয় ড্রোনকে ‘বিধ্বস্ত করে দেওয়া হয়েছে।’
অবশ্য হামলায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছে রাশিয়ার এই মন্ত্রণালয়।
রাশিয়ার বার্তাসংস্থা তাস জানিয়েছে, হামলা চালাতে আসা একটি ড্রোন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছাকাছি এলাকায় পড়েছে। তবে ইউক্রেনীয় সরকার এখনও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
টেলিগ্রামে পোস্ট করা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দু’টি ড্রোন ব্যবহার করে মস্কো শহরে কিয়েভ সরকারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে।’
মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন বলেছেন, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টার দিকে ওই দু’টি ড্রোন ‘আবাসিক নয়’ এমন ভবনগুলোতে আঘাত হানে। তিনি আরও জানান, হামলায় ভবনগুলোর বড় কোনো ক্ষতি হয়নি।
রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, মস্কো শহরের কমসোমলস্কি অ্যাভিনিউ বরাবর ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। মস্কোর পরিবহন বিভাগ টেলিগ্রামে লিখেছে, ওই রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। বেশ কিছু ছবিতে জরুরি পরিষেবাগুলোকে ঘটনাস্থলে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়া অভিযোগ করে, মস্কোতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ওই হামলার জেরে ভনুকোভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটগুলোকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় রুশ কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেন অবশ্য সেই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
এছাড়া গত মে মাসে ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার চেষ্টা হয়। সেই ঘটনায়ও ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছিল রাশিয়া। রুশ প্রশাসন বলেছিল, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হত্যার চেষ্টা চালাতেই ওই হামলার প্রচেষ্টা চালানো হয়। তবে ক্রেমলিনে ড্রোন হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে ইউক্রেন।
বিবিসি বলছে, ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসার ওপর চালানো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত একজন নিহত এবং ১৯ জন আহত হওয়ার একদিন পর মস্কোতে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটল। এছাড়া রুশ ওই হামলায় ট্রান্সফিগারেশন ক্যাথেড্রাল নামে ইউক্রেনের একটি ঐতিহাসিক গির্জাও গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো ওডেসার ঐতিহাসিক কেন্দ্রে হামলার জন্য ‘গভীরভাবে হতাশা’ প্রকাশ করেছে এবং একইসঙ্গে এই ধরনের হামলার ‘কঠোর নিন্দা জানানোর’ কথাও বলেছে সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স গির্জাটি উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে তৈরি। এটি ১৯৩৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ধ্বংস করে দিয়েছিল তবে ২০০৩ সালে তা আবার পুনর্নির্মাণ করা হয়।
ওডেসা শহরের এই স্থপনাটিকে চলতি বছর রুশ প্রতিবাদ সত্ত্বেও বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ বলে ঘোষণা করে ইউনেস্কো। জাতিসংঘের এই সাংস্কৃতিক সংস্থাটি একাধিকবার ওডেসার ওপর আক্রমণ বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে।