কানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের অভিবাসন ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির গৃহায়ন ও অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার। এই দুর্নীতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
রোববার কানাডার টেলিভিশন চ্যানেল কানাডিয়ান ব্রডকাস্ট কর্পোরেশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তেমন সমস্যা নেই। তাদের শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া অনেক স্বচ্ছ। আমার উদ্বেগের কেন্দ্রে রয়েছে প্রতি বছর ব্যাঙের ছাতার মতো দেশের সর্বত্র গড়ে উঠতে থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো।’
প্রসঙ্গত, কানাডা বিশ্বের স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে অন্যতম শীর্ষ জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল। প্রতি বছর লাখ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী কানাডার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির উদ্দেশে দেশটিতে যান। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবার একটি বড় অংশ ডিগ্রি অর্জন শেষে দেশটিতে স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করেন। কানাডায় নাগরিকত্ব ও ওয়ার্ক পারমিট জোগাড় করাও অন্যান্য দেশের চেয়ে তুলনামূলকভাবে সহজ।
চলতি ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির উদ্দেশে অন্তত ৯ লাখ নতুন বিদেশি শিক্ষার্থী কানাডায় ঢুকবেন উল্লেখ করে সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা কানাডার ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী আগমনের রেকর্ড। মাত্র এক দশক আগেও যতসংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী কানাডায় আসতেন, তার তুলনায় ৩ গুণেরও বেশি শিক্ষার্থী আসছেন এ বছর।’
কানাডার জাতীয় অর্থনীতিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অবদান রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আগমন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স ফি এবং থাকা-খাওয়াসহ অন্যান্য উৎস থেকে কানাডার সরকার প্রতি বছর ২ হাজার থেকে ৩ হাজার কোটি কানাডীয় ডলার আয় করে বলে রোববারের সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন মার্ক মিলার।
মন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা খুবই লোভনীয় একটি খাত এবং এখানে কিছু সমস্যা, কিছু দুর্নীতি-ধান্দাবাজি হচ্ছে। আজকাল অনেক বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না এবং পেছনের দরজা দিয়ে তাদের (শিক্ষার্থী) কানাডায় ঢোকানো হচ্ছে।’
‘ফলে এই ব্যবস্থার ফাঁক-ফোকর ব্যবহার করে, আইন ভেঙে কিছু ব্যক্তি বিপুল পরিমাণ অর্থ লুট করে যাচ্ছেন। আমাদের শিক্ষার্থী অভিবাসন ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়ার সমন্বয় ও স্বচ্ছতা এখন আমার একটি বড় উদ্বেগের ব্যাপার।’