স্বাস্থ্য ডেস্ক:
বাংলাদেশে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ২১ হাজারের বেশি শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতি সহায়তা জোরদার করছে ইউনিসেফ। সংস্থাটি জানিয়েছে, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে ২২ লাখ ৫০ হাজার ইউএস ডলার (২৪ কোটি ৬৯ লাখ সাড়ে ৫৪ হাজার টাকা) সমমূল্যের প্রয়োজনীয় ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট দেওয়া হবে। এছাড়া পেশাদারদের জন্য প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্বাস্থ্যবিধি খাতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী ও সেবা দেওয়া হবে।
আজ রোববার ইউনিসেফ বাংলাদেশ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখন দেশের ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় এক লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে, যার প্রায় ২০ শতাংশই ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ জনের বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, বিশ্বে যখন জলবায়ুজনিত বিপর্যয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত রোগের বিস্তার বাড়িয়ে তুলছে, যা বড়দের পাশাপাশি সরাসরি শিশুদের জীবনেও প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশে ডেঙ্গু সংকট বাড়তে থাকায় আরও একবার এখানকার শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির অগ্রভাগে রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ইউনিসেফ সরকারকে কমিউনিটিগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে, ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সহায়তা করছে। ইউনিসেফ ডেঙ্গুর বিস্তার কমাতে কার্যকর তথ্য দিয়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য ধর্মীয় ও কমিউনিটির নেতাদের একত্রিত করেছে।
জনসমাবেশে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য প্রচার করার মাধ্যমে গত এক মাসে ৫ কোটির বেশি মানুষের কাছে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা সম্পর্কিত বার্তা পৌঁছাতে সরকারকে সহায়তা করেছে ইউনিসেফ। এছাড়া ১৩ হাজার ৪০০টি পরীক্ষা করার জন্য কিট সরবরাহ করা হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কর্মীদের সক্ষমতা তৈরি ও কারিগরি পরামর্শ প্রদান, নির্বাচিত এলাকায় মশার প্রজনন স্থানগুলো পরিষ্কার করার প্রচারণার মতো পদক্ষেপ বাস্তবায়ন এবং গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সামগ্রী দিয়ে সরকারকে সহায়তা করতে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, দেশে চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতির জন্য একটি সময়োপযোগী ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ সরকার। এ সময়ে সবার উচিত বাড়িঘরে যাতে মশার বংশবৃদ্ধি না হয় তা নিশ্চিত করা এবং মশা তাড়ানোর জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
তিনি বলেন, আমরা ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট, চিকিৎসা সামগ্রী ও মশারি সরবরাহ করছি। আমরা মশার প্রজনন স্থানগুলো নির্মূল করতে সিটি কর্পোরেশন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি।