রাশিয়ায় একটি শস্যখেতে জরুরি অবতরণ করেছে একটি বিমান ১৫৯ জন আরোহী নিয়ে। রাশিয়ার ইউরাল এয়ারলাইন্সের বিমানটি দেশটির সোচি শহর থেকে ওমস্কে যাচ্ছিল এবং মাঝ আকাশে যান্ত্রিক ত্রুটির মুখে পড়ার পর পশ্চিম সাইবেরিয়ার নোভোসিবিরস্ক অঞ্চলে এটি জরুরি অবতরণ করে।
বেশ কয়েকটি বার্তাসংস্থার বরাত দিয়ে গতকাল (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার ইউরাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ১৫৯ জন আরোহী নিয়ে সোচি থেকে ওমস্কের দিকে যাওয়ার সময় পশ্চিম সাইবেরিয়ার নোভোসিবিরস্ক অঞ্চলে জরুরি অবতরণ করেছে বলে রাশিয়ান সংস্থাগুলো মঙ্গলবার জানিয়েছে।
অবশ্য এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কারও আহত হওয়ার কোনও খবর বা জরুরি অবতরণের কারণও জানা যায়নি।
রাশিয়ার বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, বিমানটিতে ১৫৯ জন আরোহী ছিলেন। এর আগে আরেক বার্তাসংস্থা তাস জানায়, জরুরি অবতরণ করা বিমানটিতে আরোহীর সংখ্যা ছিল ১৫৬ জন।
পৃথক প্রতিবেদনে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, সোচি থেকে ওমস্ক যাওয়ার পথে এয়ারবাস এ৩২০ মডেলের একটি বিমান মঙ্গলবার সকালে মাঝ আকাশে থাকা অবস্থায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে এবং সেটিকে নোভোসিবিরস্কের একটি এয়ারফিল্ডে অবতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিমানটি সেখানেও পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় বলে জরুরি পরিষেবাগুলো রাশিয়ান মিডিয়াকে জানিয়েছে।
পরে বিমানটি নোভোসিবিরস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে একটি মাঠে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, হাইড্রলিক্সের ত্রুটির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
আরটি বলছে, ইউরাল এয়ারলাইন্সের এই ফ্লাইটে ২৩ শিশুসহ ১৭০ জন লোক ছিল। প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জরুরি অবতরণের ঘটনায় যাত্রী বা ক্রুদের কেউই গুরুতর আহত হননি। কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিমানটি অবতরণ করার পরে প্লেনের বডিতে কোনও ফাঁটল বা ভাঙন দেখা দেয়নি এবং আগুনও ধরে যায়নি।
শস্যখেতে অবতরণের পর জরুরি স্লাইড ব্যবহার করে সবাই নিরাপদে বিমানটি থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
রুশ এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, একাধিক টেলিগ্রাম চ্যানেল ঘটনাস্থল থেকে ওই বিমানের ছবি শেয়ার করেছে। এসব ছবিতে অবতরণের পর ঘটনাস্থলে প্রথম উপস্থিত হওয়া কয়েকজন ব্যক্তিকে বেষ্টিত অবস্থায় শস্যখেতের মধ্যে জরুরি নির্গমণের স্লাইডসহ বিমানটিকে দেখা যাচ্ছে।
অন্যান্য ছবিতে যাত্রীদের একটি দলকেও কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এদিকে নোভোসিবিরস্ক এবং ওমস্ক অঞ্চলের গভর্নররা ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের অস্থায়ী আশ্রয় এবং পরিবহনসহ সমস্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাশিয়ার এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে।
এর আগে ২০১৯ সালে ইউরাল এয়ারলাইন্সের আরেকটি বিমান মস্কোর কাছে একটি ভুট্টা ক্ষেতে (কর্নফিল্ডে) একই রকমভাবে অলৌকিক অবতরণ করেছিল। মূলত বিমানটি টেকঅফের সময় পাখির একটি ঝাঁককে আঘাত করার পর অবতরণ করে। পরে ক্রুরা ২২৬ জন যাত্রীকে নিরাপদে সরিয়ে নিতেও সক্ষম হন।