ডেস্ক রিপোর্ট:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘ঘাতকরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। তাদের সংকীর্ণ ও লোলুপ দৃষ্টি সেদিন শুধু এইটুকু বুঝতে পারেনি, বাংলাদেশের বুকজুড়ে বঙ্গবন্ধুর নাম যেভাবে লিপিবদ্ধ করা আছে, বুলেটে তা মোছা যায় না। বরং গোটা বাংলাদেশ চিরকাল পিতা হত্যাকারীকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেই চলবে। আর বঙ্গবন্ধু চেতনায় চির-ভাস্বর হয়ে রইবেন বাংলাদেশ ও বিশ্ববুকে।’
আজ(১৩ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘ষড়যন্ত্রের উৎপাটনই শোকাবহ আগস্টের অঙ্গীকার’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘এই শোকাবহ আগস্টে আমাদের অঙ্গীকার হোক, মুজিবকে ভালোবেসে, তার চেতনাকে ধারণ করে উন্নয়নের পথে ধাবিত হওয়া। মানব মুক্তির সকল সোপানে উন্নীত হওয়া আর সমতা, মমতা ও ভালোবাসার একটি অপূর্ব বাংলাদেশ সৃষ্টি করা। উগ্র সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, অগণতান্ত্রিক চর্চা, সামরিক শাসনের আস্ফালন আর সকল প্রকার ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়ে মানব মুক্তির জয়গান প্রতিষ্ঠা হোক শোকাবহ আগস্টে আমাদের শক্তি সৃষ্টির সম্মিলিত শপথ। বঙ্গবন্ধু কন্যার ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নীত হবার স্বপ্ন শপথে আসুন সকলে সম্মিলিত হই, আসুন সংঘবদ্ধ হই। অশুভকে প্রতিহত করি, গড়ে তুলি দুর্বার ঐক্যে অপূর্ব সৃজনশীল স্নোতধারা। যেন ধুয়ে মুছে নির্বংশ হয় বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তি।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আরও বলেন, ‘পিতা মুজিবের লড়াই ছিল বিশ্ব মানবতা ও শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায়। সে দর্শনে তিনি বিশ্বনেতা ও রাজনৈতিক দর্শনে অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক মহামানব। বঙ্গবন্ধু আমাদের ভালবাসার নাম; আমাদের চেতনার আঁধার, আর বাঙালির সর্বকালের আশ্রয়। বাংলাদেশের আগামীর পথ চলার অনুপ্রেরণা, অনুরণন আর ক্যারিশমার অনুসন্ধানের একমাত্র আশ্রয়- মুজিব আদর্শ। আমরা যতই আধুনিক, অগ্রসর এবং অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে ধাবিত হবো বঙ্গবন্ধু ততবেশি আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক ও অত্যাবশ্যক হয়ে রইবেন।’
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘প্রথম বিপ্লবে ‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা’ অর্জনের পর দ্বিতীয় বিপ্লবে ‘অর্থনৈতিক মুক্তি’ বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে যদি প্রতিষ্ঠা পেতো তাহলে বাংলাদেশ বিশ্বে হয়ে উঠত নবধারার অর্থনীতি, সমাজদর্শনের এক গণমানুষনন্দিত নতুন ব্যবস্থা। আর এ সব হলে সংকট হতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, সংকট মধ্যপ্রাচ্যের ধর্মশাসিত রাষ্ট্রব্যবস্থার, সংকট পাকিস্তান নামক উদ্ভট রাষ্ট্রের। আর সংকট দেশে সুবিধালিপ্সু ক্ষমতালোভী একটি চক্রের। তারা সমস্বার্থের বেড়াজাল গড়ে তুলল। ছক আঁকলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যার। বাংলাদেশের স্বপ্ন ও অস্তিত্বকে হত্যার। ১৫ই আগস্ট মূলত: হত্যার নকশা হলো আমাদের লাল সবুজের অর্জনের অনুভূতিকে। প্রতিটি বুলেট এসে একে একে বঙ্গবন্ধুর বুক চিড়ে হত্যা করলো বাংলাদেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে। এক কথায় বাংলাদেশ বিদীর্ণ, বিবর্ণ এবং বুলেটবিদ্ধ হলো ১৯৭৫-এ।’