তেহরান এবং রিয়াদসহ অন্যান্য শহরের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু করার বিষয়ে আগামী সপ্তাহে ইরানের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করবে সৌদি আরব। দীর্ঘদিনের বৈরী দুই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীর মাঝে পুনরায় ফ্লাইট চালুর আলোচনার বিষয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন ইরানের সরকারি একজন কর্মকর্তা।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আইএলএনএর বরাত দিয়ে রোববার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে ইরানের সাথে সৌদি আরবের সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আলোচনা শুরু হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্বাভাবিক করতে নিয়মিত ফ্লাইট চালুর বিষয়টি আরেকটি পদক্ষেপ হবে। কয়েক বছরের উত্তেজনার পর কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনে গত মার্চে চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইরানের মাঝে একটি চুক্তি হয়। সৌদি-ইরানের দীর্ঘদিনের বৈরীতা ও উত্তেজনা পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে। একই সঙ্গে ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেন সংঘাতেও জ্বালানি জুগিয়েছে দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির বৈরী সম্পর্ক।
আইএলএনএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেহরান থেকে রিয়াদ এবং দুই দেশের অন্যান্য শহরে সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই বলে জানিয়েছেন ইরানের সড়ক এবং নগর উন্নয়ন বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ মোহাম্মদিবখশ।
তিনি বলেন, ‘‘একটি দ্বিপাক্ষিক ওয়ার্কিং গ্রুপ আগামী সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত সাধারণ ফ্লাইট চালু করার জন্য চূড়ান্ত আলোচনা শুরু করবে।’’
সুন্নিপন্থী সৌদি আরব শিয়া মতাবলম্বী এক নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় ২০১৬ সালে রিয়াদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে তেহরান। ওই সময় তেহরানে অবস্থিত সৌদি আরবের দূতাবাসে হামলা চালায় শত শত ইরানি।
কয়েক বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত সরাসরি কোনও ফ্লাইট চালু নেই। বর্তমানে ইরান থেকে হজযাত্রীদের নিয়ে কেবল মাঝে মাঝে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়।
মোহাম্মদ মোহাম্মদিবখশ বলেন, ফ্লাইট পুনরায় চালু করা হলে বছরব্যাপী ওমরাহ তীর্থযাত্রীরাও ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন। এছাড়া ভ্রমণের জন্যও সৌদিতে যেতে পারবেন ইরানি নাগরিকরা।
তিনি বলেন, ফ্লাইট পরিচালনাকারী কিছু এয়ারলাইন কোম্পানির তালিকা ইতিমধ্যে সৌদি আরবের কাছে হস্তান্তর করেছে তেহরান। তবে কোন কোন কোম্পানিকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি ইরানি এই কর্মকর্তা।
এদিকে, এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সৌদি আরবের সরকার মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।